ক্যাম্পাস থেকে হলে ধরে নিয়ে বাইক-ফোন কেড়ে নিল ঢাবি ছাত্ররা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ধরে হলে নিয়ে গিয়ে বহিরাগত এক ব্যক্তির মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন ও টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন ছাত্রের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন প্রজিত দাস (২৮) নামে ওই ভুক্তভোগী। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে বলে দাবি করেছেন অভিযুক্তরা।
প্রজিত নড়াইলের নরাগাতি থানা এলাকার গন্ধবাড়ীয়ার বিরেন্দ্র নাথ দাসের ছেলে। বুধবার (৩ আগস্ট) থানায় দেওয়া অভিযোগে বলেছেন, মোটরসাইকেলযোগে পলাশী হতে টিএসসির উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে সূর্যসেন হলের মো. তুষার হোসেন ও মো. শামীমুল ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা ৫-৬ জন মোটরসাইকেল থামায়।
তখন তারা লাঠিসোটা নিয়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন জোরপূর্বক নিয়ে যেতে চাইলে তিনি প্রতিবাদ করেন। পরে তারা তাকে লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি মারপিট করে মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম করে। থাপ্পড়ে তার কানের পর্দা ফেটে যায়।
অভিযোগে আরও বলেছেন, পরে পালসার মোটরসাইকেল (ঢাকা মেট্রো ল-৫১-১২৭৫), আইফোন ও নগদ ১৭ হাজার টাকাসহ সূর্যসেন হলের গেস্টরুমে নিয়ে ফের মারধর করে। পরে খালি হাতে ধাক্কা মেরে বের করে দিয়ে বলেন, ‘তুই সোজা চলে যাবি। ডানে বামে কোথাও তাকাবি না।’
বিষয়টি জানতে পেরে এসএম হলের ছাত্রলীগ নেতা ছাত্র মিলন খান (২৭) ও সাগর হোসেন সোহাগ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তারা প্রজিতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ভর্তি করেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি।
আরো পড়ুন: ঢাবি ছাত্রীকে দিয়ে প্রক্সি দেয়ানো সেই ভর্তিচ্ছু উত্তীর্ণ
প্রজিত দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, মোটরসাইকেলের মালিক মূলত এসএম হলের বন্ধু মিলনের। তিনি সেটি নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। তখন ভিসি চত্বর থেকে ধরে চাবি কেড়ে নিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। মারধরে তার কানের পর্দা ফেটে গেছে, তিনি এখন এক কানে শুনতেও পারছেন না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী মো. তুষার হোসেন বলেন, ‘প্রজিতকে আমার একজন বড় ভাই পাঠিয়েছিল আমাকে নিয়ে যেতে। কিন্তু তিনি হলে এসে আমাকে তুলে নিয়ে যেতে এসেছেন বলে জানান। আমার ছোটভাইয়েরা তখন বিষয়টি ভুল বুঝে তাকে গেস্টরুমে বসায়, মারধর করে বসে। এটি একটি ভুল বোঝাবুঝি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও সব আছে। আমি এটি নিয়ে পরে ক্ষমাও চেয়েছি। ছোট একটি ঘটনা অনেক বড় হয়ে গেছে।’
মোটরসাইকেলের মালিক ও ছাত্রলীগের উপ-প্রচার সম্পাদক মিলন খান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘প্রজিত গাড়ি নিয়ে ঘুরতে গেলে কয়েকজন তাকে সূর্যসেন হলে নিয়ে গিয়ে মারধর করেছে। পরে আমি মোটরসাইকেল নিয়ে এসেছি। তবে তারা মোবাইল ফোন ও টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে। প্রজিতকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগও করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানি বলেন, ‘এ ধরনের কোনো বিষয় আমাদের জানা নেই। অভিযোগটি এখনো আমাদের হাতে আসেনি।’
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার বলেন, তিনি খোঁজ নিয়ে দেখছেন।