আন্দোলন অব্যাহত রাখতে ঢাবি শিক্ষার্থীর ক্যামেরা বিক্রি
বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা পরিবর্তনে ৬ দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনে অর্থের যোগান দেওয়ার জন্য এবার নিজের ক্যামেরা বিক্রি করে দিয়েছেন মহিউদ্দিন রনি। শনিবার (১৬ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এ কথা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী রনি।
তিনি জানান, বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা পরিবর্তনে ৬ দফা দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করতে আশা শিক্ষার্থীদের খাবার, অবস্থানের আনুষঙ্গিক খরচ এবং সহজ.কমের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট পরিচালনা করার জন্য অর্থের হিমশিম খাচ্ছিলাম। তবে সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ যে সেই সমস্যার সমাধানও মোটামুটি করা শুরু করেছি।
তিনি আরও জানান, সোশ্যাল মিডিয়াতে অর্থ যোগানের জন্য ক্যামেরা, ফোন বিক্রির পোস্ট দেওয়ার পর আজ ক্যামেরাটা বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছি। যদিও তা যৎসামান্য। আরও অনেক টাকার প্রয়োজন। আমার উকুলেলে, আমার কাহন, গিটার আর একটা ডেক্সটপ আছে। সবগুলোই বেশ ভালো। কেউ কিনতে চাইলে তাকে যোগাযোগ করতে বলবেন।
ফেসবুকে পোস্টে তিনি জানান, অনেকেই টাকা পাঠাতে চেয়েছেন। তাদের প্রতি আমি আমৃত্যু কৃতজ্ঞ। কিন্তু আমি আমার আন্দোলনকে বিতর্কিত করতে চাচ্ছি না। তাই আপনাদেরকে টাকা পাঠাতে নিরুৎসাহিত করেছি। যদি একেবারেই দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায় আমি সবাইকে জানাবো। আশা রাখি, তখনও আপনারাই সবার আগে এগিয়ে আসবেন।
ঢাবির এই শিক্ষার্থী জানান, শিক্ষার্থী বন্ধুরা নিশ্চিন্তে আসুন অর্থের কারণে আমাদের যৌক্তিক আন্দোলন থেমে থাকবে না। জয় আমাদের সুনিশ্চিত। আলো আসবেই ইনশাআল্লাহ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ রেলওয়ের নানা অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে টানা নয় দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) থিয়েটার অ্যান্ড পারফর্ম্যান্স বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মহিউদ্দিন রনি। রেলের টিকিট কিনতে গিয়ে হয়রানির শিকার হওয়ায় ঈদুল আজহার আগে ৭ জুলাই থেকে টিকিট কাউন্টারের সামনে মহিউদ্দিন অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। গত রোববার ঈদের দিনেও তিনি অবস্থানে ছিলেন।
ছয় দফা দাবি নিয়ে শুরুতে অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি গণস্বাক্ষর কর্মসূচি চালালেও পরে পুলিশের এক সদস্যের বাধার মুখে তিনি তা বন্ধ রাখেন। মহিউদ্দিনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আরও কয়েকজন এ কর্মসূচিতে যুক্ত হয়েছেন।
মহিউদ্দিনের ছয় দফা দাবির অন্যতম দাবি হলো- টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সহজ ডটকম কর্তৃক যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করা ও হয়রানির ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া; যথোপযুক্ত পদক্ষেপের মাধ্যমে টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধ; অনলাইনে কোটায় টিকিট বুকিং বন্ধ করা ও অনলাইন-অফলাইনে টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সর্বসাধারণের সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা; যাত্রী চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া ইত্যাদি।