চবিতে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অসাধু চক্র সক্রিয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অর্থের বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার লোভ দেখানো একটি অসাধু চক্র সক্রিয় রয়েছে। প্রতিবেদনে ১০টি সুপারিশসহ সাতটি পর্যবেক্ষণে নিয়োগ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ের নানা অসংগতি তুলে ধরা হয়েছে।
ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত ফোনালাপগুলো ফাঁসের ঘটনায় চার সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এসব সুপারিশ করা হয়। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় প্রতিবেদনটি পেশ করা হয়।
বৃহস্পতিবার সিন্ডিকেট সভায় তদন্ত প্রতিবেদনটি উত্থাপন হলে তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে দুজনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও ভিসির পিএস (অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন) খালেদ মিছবাহুল মোকর রবীনের পদাবনতি এবং হিসাব নিয়ামক শাখার চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আহমদ হোসেনকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১০টি সুপারিশের মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নামে বেনামে প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগসহ অর্থের বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার লোভ দেখানো ‘চক্র’ সক্রিয় আছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। তবে উপ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও ভিসির পিএস (অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন) রবীন, আহমদ হোসেন ও অন্যরা তদন্ত কমিটিকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা না করায় চক্রটির সদস্যদের নাম বের করতে পারেনি কমিটি। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর ও রাষ্ট্রবিরোধী কাজে লিপ্ত চক্রটিকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে একটি ফৌজদারি মামলা করার সুপারিশ করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিন্ডিকেট সদস্য বলেন, 'ফাঁস হওয়া এসব ফোনালাপে রবীন ও আহমদ হোসেন যে দুঃসাহস প্রদর্শন করে অবলীলায় আপত্তিকর কথাবার্তা বলেছেন তাতে কারও প্ররোচনা, প্রণোদনা বা যোগসাজশ রয়েছে। আমার মনে হচ্ছে একটি বিশাল চক্র বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো নিয়োগের ক্ষেত্রে এরা সক্রিয়। প্রশাসনের উচিৎ এদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা।'
ফোনালাপের সত্যতা মিলেছে
ফাঁস হওয়া পাঁচটি ফোনালাপের একটি ভিসির পিএস রবীন, নিয়োগ প্রার্থী দেলোয়ার হোছাইন নিজেদের বলে স্বীকার করেছেন। অপর একটি ফোনালাপ দেলোয়ার ও কর্মচারী আহমদ হোসেনের মধ্যকার কথোপকথনের বলে দেলোয়ার স্বীকার করেছেন। কিন্তু আহমদ হোসেন কথোপকথনের বিষয়টি অস্বীকার করে তাঁর ফোন হারিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন। তবে কখন, কোথায় হারিয়েছে তা জানাতে পারেননি। জিডিও করেননি বলে জানিয়েছেন। তবে তাঁর কণ্ঠ ও অডিওর কণ্ঠ হুবহু বলে উল্লেখ করেছে তদন্ত কমিটি।
নিয়োগ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নিরাপত্তার ঘাটতি
নিয়োগসংক্রান্ত কার্যাদির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে পর্যাপ্ত স্থান, নথিপত্র সংরক্ষণের আসবাবপত্র ও নথির নিরাপত্তার যথেষ্ট ঘাটতি পেয়েছে তদন্ত কমিটি। তাই দপ্তরের সবকিছু সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার জন্য সুপারিশ করেছে।
নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অসাধু চক্র সক্রিয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নামে বেনামে প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগসহ অর্থের বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার লোভ দেখানো ‘চক্র’ সক্রিয় আছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে পিএস রবীন, আহমদ হোসেন ও অন্যরা তদন্ত কমিটিকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা না করায় চক্রটির সদস্যদের নাম বের করতে পারেনি কমিটি। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর ও রাষ্ট্রবিরোধী কাজে লিপ্ত চক্রটিকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে একটি ফৌজদারি মামলা করার সুপারিশ করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত নিয়োগ না দেওয়ার সুপারিশ
ফারসি বিভাগে তিন জন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিলেও পাঁচজনকে সুপারিশ করা হয়। বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত সুপারিশ বা নিয়োগ বিশ্ববিদ্যালয়ের শুদ্ধাচারের পরিপন্থী বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করে বিজ্ঞাপিত পদ অনুযায়ী নিয়োগ দিতে সুপারিশ করা হয়েছে।