ছাত্রলীগের চিকায় চকচক করছে চবির হল

ছাত্রলীগের চিকায় চকচক করছে চবির হল
ছাত্রলীগের চিকায় চকচক করছে চবির হল  © টিডিসি ফটো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এ এফ রহমান হলে শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক উপগ্রুপের আধিপত্য বিস্তারকল্পে হলের দেয়াল জুড়ে মারা হয়েছে উপগ্রুপ ‘বিজয়’র নামে চিকা। উপগ্রুপটির চিকায় পাল্টে গেছে ৪ তলা বিশিষ্ট পুরো এই হলটি। গ্রুপভিত্তিক রাজনীতির এমন দৃষ্টান্তে হলটির নাম নিয়ে রীতিমত বিভ্রান্তে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ চিকা অপসারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছে হল প্রশাসন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এ এফ রহমান হল ছাড়াও হলের ক্যাফেটেরিয়ার ভেতরে দেয়ালের রং নেই। তবে বাইরের দেয়ালে উপগ্রুপটির চিকায় চকচক করছে। মানছেন না কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক রাজনীতি বন্ধের নির্দেশনাও। এ অবস্থায় আবাসিক এ হলটির সঙ্গে নতুন শিক্ষার্থীরা বিজয় নামেই পরিচিত হচ্ছেন।

উপগ্রুপ বিজয়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিজ নিজ গ্রুপের অস্তিত্বের জানান দিতেই পদক্ষেপ নিয়েছেন তারা। শুধু বগিভিত্তিক উপগ্রুপ বিজয়ই নয়, সিক্সটি নাইন, বাংলার মুখ, ভিএক্স ও কনকর্ডসহ অনেকগুলো গ্রুপের নামেও জায়গায় চিকা দেখা যাচ্ছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান হাবিব বলেন, প্রথমদিন এসে ভেবেছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো চবিতেও বিজয়-৭১ হল রয়েছে। তবে ভাবছিলাম শুধু বিজয় লেখা, সাথে-৭১ নেই যে! পরে  জানতে পারি এখানে ছাত্রলীগের বিজয় উপগ্রুপের কর্মীরা থাকে বলেই এ নাম দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: চবি ছাত্রলীগ মানেই ‘সংঘর্ষ’

ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাইফ উদ্দিন রুহান বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমি খুবই হীনমন্যতায় থাকি। পড়াশোনার বিষয় থেকেও এখানে রাজনৈতিক গ্রুপগুলো নিয়ে বেশি কথাবার্তা হয়। এফ রহমান হলের সামনে গেলে তো কথাই নেই। হলের দেয়াল দেখে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই মনে আসে মারামারির কথা। চিকা মারা থাকায় হলের নাম মনে না আসলেও গ্রুপের নাম ভুলতে পারি না।

কয়েকজন নেতার বক্তব্য হচ্ছে এসব তাঁদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের অংশ অথবা কর্মীদের আবেগের প্রতিফলন।

জানতে চাইলে বিজয় গ্রুপের নেতা ও ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক নজরুল ইসলাম সবুজ বলেন, শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক রাজনীতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক আগে থেকে চর্চা হয়ে আসছে। আমরা বগিভিত্তিক রাজনীতির পক্ষে নই, তবুও হলগুলোর দেয়ালে কর্মীরা হয়তো তাদের আবেগ থেকে চিকা মারে। সেটা শুধু আমাদের গ্রুপ না, প্রতিটি গ্রুপের কর্মীরা এটা করে থাকে। যদি এফ রহমান হলের বিষয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আপত্তি থাকে, সেক্ষেত্রে বিষয়টা আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখবো।

শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, আমরা প্রশাসনকে বলেছিলাম বগিভিত্তিক সংগঠনগুলোর চিকা মুছে দেওয়ার জন্য। কিন্তু প্রশাসন এতদিনেও কেন এ বিষয়ে নীরব, এটা আমারও প্রশ্ন। যেহেতু বগিভিত্তিক সংগঠন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ থেকে নিষিদ্ধ, তাই এ ধরনের কর্মকাণ্ড সমর্থন করতে পারি না আমরা।

এএফ রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. কাজী এসএম খসরুল আলম কুদ্দুসী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বছরখানেক আগে আমরা একবার পুরো হলটি পরিস্কার করেছি। এর পরদিনই হলের দেয়ালে চিকাগুলো মারা হয়েছে। এটা আমার কাছেও ভালো লাগেনি। যেহেতু এখানে ছাত্র সংগঠনগুলোর চিকা মারা হয়েছে, তাই তাদের নেতাদেরও বিষয়টি দেখা উচিৎ। এছাড়া আমি একা চাইলে তো হবে না, চিকা অপসারণ করতে হলে প্রশাসনেরও সহযোগিতা প্রয়োজন।