‘হল আমরা লিজ নিছি, সাংবাদিক-প্রক্টর খাই না’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ বিজয়ের কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের হুমকিসহ হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। এতে ৯ জনের বিরুদ্ধে প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতি( চবিসাস)। এ ঘটনায় রোববার (১৯ জুন) বেলা ১২টায় চবি প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বরাবর অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, ১৬ জুন (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাওল হলে বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী চবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলামের কক্ষে ঢুকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আগের ঘটনার জেরে গালিগালাজ করতে থাকে। এসময় অকথ্য ভাষায় সাংবাদিকদের হেনস্তা করে তারা সেখান থেকে চলে যায়৷ এরপর আরও দুই দফায় এসে তারা সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে বলেন, "এই হল আমাদের। হল আমরা লিজ নিছি। যখন ইচ্ছা তোদেরকে হল থেকে বের করে দেব৷ এই রুম যদি তোদের হয় পুরা হল আমাদের। কি করবি তোরা? নিউজ করবি তোরা? কর। আমরা সাংবাদিক খাই না। প্রক্টর খাই না৷"
অভিযুক্তরা হলেন, লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের জোবায়ের নিলয়, অর্থনীতি বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের রানা আহমেদ ও ওয়ায়দুল হক লিমন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ২০১৬-১৭ সেশনের আশিষ দাস, দর্শন বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী সাজ্জাদুর রহমান, ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী তুষার তালুকদার বাপ্পা, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের আবির আহমেদ ও একই বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের জাহিদুল ইসলাম এবং সংস্কৃত বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের প্রমিত রুদ্র।
অভিযোগপত্রে বলা হয় উপগ্রুপ বিজয়ের নেতা ইলিয়াসের পরোক্ষ মদদেই এমন ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক সহকারী প্রক্টর ড. শহীদুল ইসলাম ও এসএএম জিয়াউল ইসলাম পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন এবং অভিযোগ দিতে বলেন।
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু এ বিষয়ে বলেন, আমরা বিষয়টি জেনেছি। ছাত্রলীগের কোনো কর্মী সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন আচরণ করতে পারে না। আমরা তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। তারা যদি ছাত্রলীগের অনুসারী হয় তাহলে আমরা অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, যারা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছে, তারা ছাত্রলীগের সুনাম নষ্ট করার জন্য এসব করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার। এছাড়া আমরাও আমাদের জায়গা থেকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবো।
চবি প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, প্রমাণ হিসেবে বেশকিছু অডিও রেকর্ডও আমাদের হাতে এসেছে। এমন অশালীন আচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে কখনোই কাম্য না। আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টি ভালোভাবে খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। ইতোমধ্যে হল প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি আমরা।
এর আগে ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বরও চবি প্রক্টর (ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া) পরিচয়ে সাংবাদিককে হুমকি দেয় ছাত্রলীগের এক কর্মী।