রাবিতে সিট দখলে নিতে হলের কক্ষে ছাত্রলীগের তালা
সিট দখলে নিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হলে অবস্থানরত এক আবাসিক শিক্ষার্থীর বিছানাপত্র নামিয়ে দিয়ে কক্ষে তালা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হল শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। শনিবার (১৮ জুন) বিকাল ৩টায় হলটির ২২৮ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম সালমান আহমেদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি। অপরদিকে অভিযুক্তের নাম শফিউর রহমান রাথিক। তিনি মাদার বখশ হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ, ২২৮ নম্বর কক্ষের শিক্ষার্থী হওয়া সত্ত্বেও ‘অকথ্য’ ভাষায় গালিগালাজ এবং হুমকি দিয়ে তার বিছানাপত্র বের করে কক্ষে তালা দিয়েছে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাথিক।
অপরদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা রাথিক বলছেন, তিনি সেই কক্ষে তালা দেয়নি এবং এই ঘটনার সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা নেই।
জানতে চাইলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সালমান আহমেদ বলেন, আমি পূর্বে হলের চার শয্যাবিশিষ্ট ৩১৮ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলাম। চলতি মাসের গত ১৩ তারিখে হলের এক শয্যাবিশিষ্ট ২২৮ নম্বর কক্ষটি ফাঁকা হওয়ায় সেই কক্ষে উঠার জন্য হল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলি। কর্তৃপক্ষের কথামত আমি হলের এক আবাসিক শিক্ষকের সুপারিশ নিয়ে হল প্রাধ্যক্ষকে লিখিত আবেদন দেই। পরে হল কর্তৃপক্ষ আমার যাবতীয় তথ্য খাতায় লিখে নেয় এবং সেই কক্ষে উঠতে বলে। তার প্রেক্ষিতে সেদিনই আমি ২২৮ নম্বর কক্ষে উঠি।
সালমান আহমেদ আরও বলেন, ১৩ জুন থেকে আমি ২২৮ নম্বর কক্ষেই অবস্থান করছি। পরে শনিবার বিকেল তিনটায় হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউর রহমান রাথিক হলের কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে তার এক ছেলেকে আমার কক্ষে তুলে দেন এবং আমার বিছানাপত্র বাইরে বের করে দেওয়ার পাশাপাশি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং হুমকি দিয়ে কক্ষের দরজায় তালা দেন।
তবে কক্ষে তালা দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে নিজের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানান অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা শফিউর রহমান রাথিক। তিনি বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। আর সেই কক্ষে উঠা ছেলেটিকেও আমি চিনি না।
এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ ড. শামীম হোসাইন বলেন, হলের কোন কক্ষে হল প্রশাসন ব্যতীত অন্যকেউ তালা লাগানোর অধিকার রাখে না। আমরা আগামীকাল এ বিষয়ে বসব এবং তদন্ত কমিটি গঠন করব। তদন্ত সাপেক্ষে যারা তালা দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হল প্রাধ্যক্ষ আরও বলেন, সালমান আহমেদকে অফিশিয়ালি সেই কক্ষটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে কিনা এই বিষয়েও আমি অবগত না। আগামীকাল বিষয়টি নিয়ে আমরা বসব। যদি হলের কোন কর্মকর্তা আমাকে না জানিয়ে সালমানকে কক্ষটি বরাদ্দ দিয়ে থাকে তাহলে আমি সেই কর্মকর্তাকে শোকজ করব। আর সালমান যদি প্রমাণ করতে পারে ২২৮ নম্বর কক্ষটি হল কর্তৃপক্ষ তাকে বরাদ্দ দিয়েছে, তাহলে তাকে সেই কক্ষেই রাখা হবে।