মাছ থেকে উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণ শুরু রাবির
মাছ থেকে তৈরি বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত শুরু করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) কর্তৃপক্ষ। মডিফাইড এটমোস্ফিয়ার প্যাকেজিং (ম্যাপ) কার্যক্রমের আওতায় ৫ ধরণের ৯টি প্রোডাক্ট তৈরি করেছে ফিশারিজ বিভাগ। আজ রবিবার (১২ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদভুক্ত ফিশারিজ বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করেন।
সেমিনারে প্রধান গবেষক তরিকুল ইসলাম বলেন, এ প্রকল্প তিনটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে পরিচালিত হয়েছে। যেখানে স্বাদুপানি ও সামুদ্রিক মাছ থেকে বিভিন্ন ধরণের রেডি টু কুক, রেডি টু ইট এবং মডিফাইড এটমোস্ফিয়ার প্যাকেজিং খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন করা। যা বিভিন্ন তাপমাত্রায় সংরক্ষিত হবে। এছাড়া খাবারের গুণাগুণ ও স্থায়িত্বকাল নির্ণয় করে মৎসজাত এ দ্রব্যগুলো প্যাকেটজাত করে স্বল্প পরিসরে বিক্রি করার মাধ্যমে ভোক্তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলা
তিনি আরও বলেন, এই গবেষণার মূল একটি বিষয় হলো মডিফাইড এটমোস্ফিয়ার প্যাকেজিং (ম্যাপ)। যেখানে একটি নির্দিষ্ট গ্যাস অথবা গ্যাসের মিশ্রণ দ্বারা খাবার সংরক্ষণ করা হয়। তিনি জানান, ম্যাপ প্যাকেজিং নিয়ে দেশে এটাই প্রথম কোন গবেষণা কার্যক্রম। আমাদের উৎপাদিত পণ্যগুলো শ্রীঘ্রই সেগুলো বাজারজাত নিশ্চিত করা হবে।
সহযোগী গবেষক অধ্যাপক ইয়ামিন হোসেন বলেন, অনেকেই মাছ কাটার জন্য বা গন্ধের কারণে খেতে পারেন না। মূলত তাদের জন্য এসব তৈরিকৃত দ্রব্যগুলো অনেক উপকারে আসবে বলে মনে করি। প্রাথমিকভাবে স্বল্প পরিসরে এই পণ্যগুলো বাজারজাত শুরু হয়েছে। ক্রেতাদের থেকে ভালো আগ্রহ পেলে বাণিজ্যভাবে উৎপাদনে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে গত তিন বছরের গবেষণায় এসব পণ্য উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছেন এ বিভাগের গবেষকরা। গবেষণায় সহযোগী হিসেবে ছিলেন একই বিভাগের গবেষক অধ্যাপক ইয়ামিন হোসেন এবং অধ্যাপক সৈয়দা নুসরাত জাহান।
আরও পড়ুন: এক পদে আবেদন ২ লাখ ৫৫ হাজার
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া। ফিশারিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মনজুরুল আলম ও ডিন অধ্যাপক ইশতিয়াক হোসেনসহ বিভাগের অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন গবেষণার প্রশংসা করে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, রিসার্চের সমাপ্তি একটি গবেষকের সবচেয়ে বড় পাওয়া। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় মানে বুঝি সেখানে বৈশ্বিক গবেষণার পাশাপাশি নিত্য নতুন আবিষ্কার হবে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগ প্রতিনিয়ত করে চলেছেন। মানব কল্যাণে হওয়া এ গবেষণা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। তাছাড়া এই বিভাগে একটি অত্যাধুনিক ল্যাব প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি গবেষকদের পণ্য বাজারজাতকরণে উৎসাহ প্রদান ও সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন উপাচার্য।
উল্লেখ্য, সেমিনার শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে অবস্থিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্যুভেনিয়ার শপে মৎসজাত এসব পণ্যের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড গোলাম সাব্বির সাত্তার।