আমার জীবন একটা ব্যর্থ জীবন— সুইসাইড নোটে ঢাবি ছাত্রী

জায়না হাবিব প্রাপ্তি
জায়না হাবিব প্রাপ্তি  © ফাইল ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন সিটির ১৬ নম্বর ভবনের নিচ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী জায়না হাবিব প্রাপ্তির (২২) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরবর্তীতে ওই ভবনের ছাদে তল্লাশি চালিয়ে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে আদাবর থানা পুলিশ।

পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে প্রাপ্তি তার জীবনের ব্যর্থতাকে দায়ী করে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। তবে সুইসাইড নোটটি তার লেখা কি না সেটি তদন্ত করে দেখা হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশের সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তারা।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মুজিব পাটোয়ারী বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি মেয়েটি আত্মহত্যা করেছেন। এই ঘটনায় ছাদ থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। ওই সুইসাইড নোটে সেখানে তার জীবনের দীর্ঘ হতাশার কথা উল্লেখ করেছেন।

সুইসাইড নোটের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, পারিবারিকসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অনেকটাই হতাশাগ্রস্ত সব কথা লিখেছেন।

উদ্ধার হওয়া ওই সুইসাইড নোটে প্রাপ্তি লিখেছেন- ‘আমার জীবন একটা ব্যর্থ জীবন। না পারলাম বাবা-মাকে খুশি করতে না পারলাম অন্য কাউকে খুশি করতে। একটা ঘটনা জানার পরও যখন কেউ চুপ করে থাকে তখন সত্যিই- সবকিছু অর্থহীন মনে হয়। আমি গেলে কিছু আসবে যাবে না, আমি জানি। Because every person is replaceable. আমরা কাদেরকে ভালোবাসি তারা সেটা জানে। কে বেশি কষ্ট পাবে সেটাও জানি। But nothing makes sense anymore. The pain helps increasing. Now tell me how much a person can take.
Prapti.
June 1, 2022’

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছে, ওই ছাত্রী ভবনের দ্বিতীয় তলায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। বিকেলে ছাদে উঠে প্রায় এক ঘণ্টা ছিলেন। এরপর ভেতর থেকে দরজা আটকিয়ে দেন। পরে ভবনের নিরাপত্তাকর্মী ছাদে তালা দিতে গেলে মেয়েটি ভেতর থেকে তাকে চলে যেতে বলেন। এরপর নিরাপত্তাকর্মী চলে যান।

এদিকে প্রাপ্তির সহপাঠীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তিনি প্রায় সময় হতাশাগ্রস্ত ও একা থাকতে পছন্দ করতেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাপ্তির বিভাগের ক্লাস প্রতিনিধি মাসুদ রানা সোহান বলেন, সে নিজের লাইফ নিয়ে উদাসীন ছিল। তার সম্পর্কে একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। সে একটা  মিড মিস করেছিল। তখন মিড মিস করার কথা জিজ্ঞাসা করলে বলে কারণ ছাড়া মিস করেছি। পরবর্তীতে পরীক্ষা দেওয়ার সময় কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই পরীক্ষা দেয়। অর্থাৎ পড়াশোনা নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা ছিল। সে বিষন্নতায় ভুগছিল যেটা তার পোস্ট দেখে বুঝা যায়। প্রায় সময় তার কথাবার্তায় জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা প্রকাশ করতো।

আরেক সহপাঠী তাসফিয়া তাজরিন পৃথা বলেন, সে সবার থেকে আলাদা ছিল। একটু স্বাধীনচেতা ও একা থাকতে পছন্দ করতো। এই একা থাকাটাই একটা সময় হতাশায় নিয়ে গেছে এমন কিছু হবে।


সর্বশেষ সংবাদ