৩০ মে ২০২২, ১৯:৪৭

‘নিদ্রাহীনতা আর সহ্য করতে পারছি না’

ঢাবি ছাত্র মেহেদী   © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক শিক্ষার্থী মেহেদী হাসানের আত্মহত্যা করেছেন। রবিবার বিকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে একটি মেসে আত্মহত্যা করেন তিনি। জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবত বিষণ্ণতায় ভুগছিলেন তিনি। 

এদিকে, ঢাবির এই শিক্ষার্থীর বসবাসের কক্ষে তার বিষণ্ণতা ও আত্মহত্যার পেছনে বেশ কিছু কারণ পাওয়া গেছে। একটি চিরকুটে মেহেদী লিখেছেন, ‘নিদ্রাহীনতা আর সহ্য করতে পারছি না।’

মেহেদীর পরিবার ও সহপাঠীদের বরাতে জানা গেছে, মৃত্যুর আগে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। শুধু বিএসইসি’ই নয়, আরও বেশ কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। 

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ফিন্যান্স বিভাগের ১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে থাকতেন তিনি। 

কর্মজীবনে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ-এর (বেপজা) অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর, ৩৮তম বিসিএস-এর মাধ্যমে নন-ক্যাডারে সহকারী সমাজসেবা অফিসার, বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কে অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর, রুপালী ব্যাংককে সিনিয়র অফিসার, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) জুনিয়ার অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার, হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনে জেনারেল ম্যানেজার, দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) সহকারী পরিচালক পোস্টে চাকরির সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। 

তবে মেহেদীর কেন এমন ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন! এ প্রসঙ্গে মেহেদীর বর্তমান কর্মস্থল সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের এক সহকর্মীর সঙ্গে কথা হয়। নুসরাত নওশিন জানান, মা-বাবা দুইজনকে হারিয়ে ভীষণ একা হয়ে পড়েছিলেন মেহেদী। দুই ভাই থাকা সত্ত্বেও একা মেসে থাকতেন তিনি৷ শেষ ২-৩ মাস রাতে এক ফোঁটা ঘুমাননি তিনি। অনেক কাউন্সেলিং, ডাক্তার, সাইকোলজিস্ট দেখিয়েও অবস্থার উন্নতি হয়নি তার।

একাধিক সহপাঠী সূত্রে জানা গেছে, করোনার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ছেড়ে ধানমন্ডিতে ভাড়া বাসা নিয়ে থাকতেন মেহেদী। প্রায় এক বছর যাবত বিষণ্ণতায় ভুগছিলেন তিনি। রাতে ঠিকমতো ঘুমাতেও পারতেন না তিনি। এক বছর আগে তার মা মারা যায়। তারপর থেকেই কেমন যেন হয়ে যান মেহেদী। 

মেহেদীর ভাইয়ের বন্ধু গাজীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মুরাদ আলী জানিয়েছেন, স্কয়ার হাসপাতালের পেছনে মেসে আত্মহত্যা করেন মেহেদী। তার মা মারা যাওয়ায় হতাশায় ছিল মেহেদী। ঘুমাতেও পারত না। একমাস আগে তাকে ভাইয়ের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। মেসে আত্মহত্যা করে মেহেদী। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করে মেস থেকে তার লাশ উদ্ধার হয়।