অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে কাঁধে করেই পলাশকে মেডিকেলে নেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা

পলাশকে ঘাড়ে নিয়ে মেডিকেলের দিকে ছুটছেন তার সহপাঠীরা
পলাশকে ঘাড়ে নিয়ে মেডিকেলের দিকে ছুটছেন তার সহপাঠীরা  © টিডিসি ফটো

সময়মতো মেডিকেল সেন্টারে ফোন দিয়েও অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া পায়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের পুকুরে ডুবে মৃত্যুবরণকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পলাশকে উদ্ধারকারী ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। তবে মেডিকেল সেন্টারের সিনিয়র অফিসার বলছেন ফোনের পাওয়ার সাথে সাথেই অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়েছিল। যদিও পলাশকে উদ্ধার করে মেডিকেলে নেয়ার পরে সেখানে অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক শিক্ষার্থী।

প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ঘটনা ঘটে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে। ঘটনার পর পরই ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টারে জরুরী অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর জন্য ফোন করে। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স না আসলে পলাশকে উদ্ধারকারী আট থেকে দশ জন শিক্ষার্থী কাঁধে করে পলাশীর মোড়ে নিয়ে যায়। সেখানে রাস্তায় চলমান একটি গাড়িকে দাঁড় করিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে পলাশকে সেই গাড়িতে উঠানো হয়।

এ বিষয়ে আনন্দ ফকির নামের এক উদ্ধারকারী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, পলাশ ডুবে যাওয়ার পর আমাদের দৃষ্টিগোচর হলে তখনই অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হয়। কিন্তু এতোক্ষণ পরেও অ্যাম্বুলেন্স না আসায় আমরা কাঁধে করে তাকে পলাশীর মোড় পর্যন্ত নিয়ে যাই। সেখানে একটি গাড়িতে উঠিয়ে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হয়। তাকে উদ্ধারের পর সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পৌঁছে।

এদিকে পরবর্তীতে পলাশকে ঢাকা মেডিকেলের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করানো হয়। দীর্ঘ এক ঘন্টা নিবিড় পরিচর্যার পরেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। পরে দুপুর দুইটা ১৫ মিনিটে তিনি মারা যান।

পলাশের মৃত্যুর পিছনে মেডিকেল সেন্টারের গাফিলতি ছিল বলে মনে করেন শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগ সভাপতি কামাল উদ্দিন রানা। তিনি বলেন,"যখন সে পুকুরে ডুবে যায় তখন তো সময় খুব অল্প ছিল। এটা তো একটা এক্সিডেন্ট। ঘটনার পর অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হলেও সময়মতো তা আসে নাই। এটা মেডিকেল সেন্টারের গাফিলতি ছিল। কিন্তু আমাদের প্রভোস্ট ও প্রক্টর স্যারের গাফিলতি ছিল না। তারা আমাদের যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন।"

কামাল বলেন, হলে হলে যদি অ্যাম্বুলেন্স থাকতো তাহলে আজকে হয়তো পলাশকে বাঁচানো যেত। প্রশাসনের উচিত প্রতিটি হলে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা।

এদিকে শিক্ষার্থীদের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মেডিকেল সেন্টারের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. হাফেজা জামান। তিনি বলেন, ফোন দেয়ার সাথে সাথে আমি অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়েছি। এক সেকেন্ড দেরি করিনি। 

প্রসঙ্গত, পলাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। ফুটবল খেলার পর সাঁতার কাটতে গিয়ে আজ দুপুরের দিকে পানিতে ডুবে যান পলাশ।


সর্বশেষ সংবাদ