ঢাবিতে ‘অতিমারী থেকে সমৃদ্ধির পথে অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক প্রাক বাজেট সংলাপ অনুষ্ঠিত

প্রাক বাজেট সংলাপ-২০২২
প্রাক বাজেট সংলাপ-২০২২  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেন্টার অন বাজেট এন্ড পলিসির উদ্যোগে ‘বাজেট ২০২২-২৩: অতিমারী থেকে সমৃদ্ধির পথে অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক প্রাক বাজেট সংলাপ-২০২২ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, করোনা মহামারি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ খাত নিয়ে আজকের আলোচনা। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে শিক্ষা খাতে জাতীয় আয়ের (জিডিপি) ২.০৮% ব্যয় করা হয় যা আন্তর্জাতিক মানদন্ডে ন্যুনতম ৪-৬% হওয়া উচিত। সামাজিক সুরক্ষা খাতে জিডিপির ন্যুনতম ৩% ব্যয় হওয়া উচিত। তেমনি ভাবে স্বাস্থ্য খাতে আমরা জিডিপির ১ থেকে ১.৫ ব্যয় করি সেটিও ন্যুনতম ৩% হওয়া উচিত। অতএব এই তিনটি খাতে জিডিপির অন্তত ১০% ব্যয় করা উচিত সেখানে আমরা তার অর্ধেকে আছি।

প্রফেসর আখতারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে শিক্ষা খাতে বাজেটের সর্বোচ্চ বরাদ্দ ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে, ১৯৭৩ সালে।  আমরা এখনো সেখানে পৌঁছাতে পারিনি। আমাদের একচুয়াল বাজেট এবং মুল বাজেটের মধ্যে ২৫% এর মত একটি গ্যাপ থেকে যায়।  যার মৌলিক কারণ হলো গুড গভর্নেন্স এর অভাব। কোন প্রজেক্ট যখন শুরু হয় তখন সেই প্রজেক্ট এর সফল সমাপ্তি যথাসময়ে ঘটে না। ফলে বাজেটের তুলনায় খরচ বেড়ে যায়।

ভিসি বলেন, আমাদের অর্থনীতিসহ সকল উন্নয়নকে টেকসই করতে প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ ও সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে করোনা মহামারি পরিস্থিতিতেও দেশের অর্থনীতি ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রা অব্যাহত ছিল। দেশের এই উন্নয়নের ধারা আরও এগিয়ে নিতে সঠিকভাবে অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সুশাসনের অভাবগুলোকে চিহ্নিত করে সেগুলো নিরসনে কাজ করার জন্য ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।

মূল প্রবন্ধে জাতীয় বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিখাতকে অগ্রাধিকার দেয়ার আহ্বান জানানো হয়। প্রবন্ধকারদ্বয় বলেন, বিদ্যমান ও উদীয়মান চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবেলা করে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের দিকে নজর দিতে হবে। টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, ন্যায়পরায়ণতা, দূরদর্শিতা এবং সামাজিক শুদ্ধাচার নিশ্চিত করতে হবে। তারা করোনার প্রভাবে শিক্ষার ক্ষতি নিরূপণ এবং কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়নে যথাযথ অর্থ বরাদ্দের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে স্বাধীন শিক্ষা ঘাটতি মোকাবেলা কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন।

এতে প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ও সেন্টার অন বাজেট এন্ড পলিসির চেয়ারম্যান প্রফেসর মমতাজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে প্রাক বাজেট সংলাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) প্রফেসর ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর ড. এম আবু ইউসুফ এবং ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. কাজী মারুফুল ইসলাম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর এবং অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান প্রবন্ধের উপর আলোচনায় অংশ নেন।


সর্বশেষ সংবাদ