‘জীবনের কাছে হার মেনে গেলাম’ স্ট্যাটাসে রাবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজ আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়ে সোহাগ খন্দকার (২৮) নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাবেক এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। তিনি ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের রাবির চারুকলা অনুষদের ১৫তম ব্যাচের প্রাচ্যকলা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী।
শনিবার (৯ এপ্রিল) চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. হীরা সোবাহান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, শুক্রবার মধ্যরাতে নিজ কক্ষে গলায় গামছা পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
নিহত সোহাগ খন্দকার নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার কয়ানিজ পাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
জানা যায়, আত্মহত্যার পূর্বে ৮ ঘণ্টার ব্যবধানে নিজ ফেসবুক ওয়ালে ভিন্ন ভিন্ন ৪টি স্ট্যাটাস দেন তিনি। ফেসবুকে প্রথম স্ট্যাটাসে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টা ৪৭ মিনিটে তিনি লিখেছেন, ‘ভালো থাকুক সেসব মানুষ যারা শুধু নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে। যার কাছে অন্যের গুরুত্ব নাই বললেই চলে।’
এরপর শুক্রবার দিবাগত রাত ২টা ৪৯ মিনিটে ফেসবুকে তিনি আরও একটি স্ট্যাটাস দেন। এতে তিনি লিখেন, ‘যদি কেউ আমার ওপর কষ্ট নিয়ে থাকেন। আল্লাহর দোহাই মাফ করে দিবেন।’
রাত ৩টা ৮ মিনিটে তৃতীয় স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, ‘জীবনের কাছে হার মেনে গেলাম। আমি আর পারলাম না।’
সর্বশেষ রাত ৩টা ১১ মিনিটে আরও একটি স্ট্যাটাস দেন সোহাগ। এতে তিনি জানান, ‘একটা মানুষ যখন আর জীবনের কাছে যখন যখন হেরে যায় তখন আর করার কিছু থাকে না।’
এই স্ট্যাটাসের পর থেকেই সোহাগকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন : প্রেমে বাধা দেওয়ার অভিযোগে প্রেমিককে দিয়ে মাকে হত্যা
শনিবার সকালে সোহাগের সহপাঠীদের সূত্রে জানা যায়, সোহাগের ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে স্থানীয় লোকজন বাসায় এসে সোহাগকে ডাকাডাকি করেন। এতে সোহাগের কোনো সাড়াশব্দ না পেলে দরজা ভেঙে তার কক্ষে প্রবেশ করেন তারা। পরে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান তারা।
আরও জানা গেছে, এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে সোহাগকে উদ্ধার করে সৈয়দপুর পঞ্চাশ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক সোহাগকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. হীরা সোবাহান বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আত্মহত্যা কোনো সমাধানের পথ নয়। আমার সাবেক ও বর্তমান সকল শিক্ষার্থীদের প্রতি পরামর্শ থাকবে তারা যাতে কখনো আত্মহননের পথ বেছে না নেয়।