রুম দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি জসীম উদ্দিন হলের একটি কক্ষ নিজেদের দখলে নিতে হল শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক ধস্তাধস্তি হয়েছে। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
রবিবার (২১ মার্চ) মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে। গভীর রাত পর্যন্ত এ ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া চলেছে।
জানা গেছে, জসীম উদ্দিন হলে সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি ওয়ালিউল সুমন ও সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমানের গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। ওয়ালিউল সুমন ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও লুৎফর রহমান ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের অনুসারী।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমানের অনুসারীদের মধ্যে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের আশিকুর রহমান আশিক ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ইসমাইল এবং ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সংস্কৃত বিভাগের মহিত ও উর্দু বিভাগের রাসেলের নেতৃত্বে প্রথমে তারা (লুৎফরের অনুসারীরা) হলের ২১৪ নম্বর কক্ষে আক্রমণ করে। তবে এ রুমে সভাপতি ওয়ালিউল সুমনের গ্রুপের কর্মীরা থাকত।
আরও পড়ুন : শহীদ মিনারে টিকটক ও অশালীন কার্যক্রম, আটক ৬ তরুণ-তরুণী
আরও জানা যায়, সাধারণ সম্পাদকের গ্রুপের জুনিয়ররা হামলায় অংশ নিতে না চাইলে আশিকুর রহমান আশিক (লুৎফরের অনুসারী) জোরপূর্বক তাদের হামলায় অংশ নিতে বাধ্য করে। এই হামলায় ২টা ল্যাপটপ, ২৫ হাজার টাকা, জামা-কাপড় ও মুঠোফোনসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনার পাল্টা জবাবে সভাপতি ওয়ালিউলের অনুসারীদের মধ্যে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সোহান, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শাহারিয়ার সাগর, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী হেদায়েতুল ইসলাম, আরবি বিভাগের নাঈমের নেতৃত্বে প্রথম দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষের জড়িয়ে পড়ে। এ সময় উভয়পক্ষকে হাতে স্ট্যাম্প, রডসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে দেখা যায়।
এদিকে উত্তেজনা জড়িয়ে পড়লে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
আরও পড়ুন : ঢাবি শিক্ষার্থী আদরের মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের মামলা
তবে একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, এ ঘটনায় হল প্রশাসনের ভূমিকাও হতাশাজনক ছিল।
এ ব্যাপারে হল ছাত্রলীগ সভাপতি ওয়ালিউল সুমন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সাধারণ সম্পাদকের ছেলেরা যখন রুম দখল করতে যায় তখনই এ ঘটনা ঘটে। এটা আসলে ঠিক না। বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের জন্য আমি অনেক চেষ্টা করেছি। আশা করি সামনে আর এ রকম কোন ঘটনা ঘটবে না।
তবে কক্ষ দখলের বিষয়টি অস্বীকার করে সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান বলেন, কক্ষ দখলের কোন ঘটনা ঘটেনি। আমরা অনেক চেষ্টা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি।
এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ বলেন, গতকাল রাতের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।