২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২০:২৯

জাবিতে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি মারামারি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ফটো

হলের ক্যান্টিনে খেতে বসার ‘নিয়মকানুন’ না মানার ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মারামারির ঘটনা ঘটেছে। গত রোববার রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ক্যান্টিনে শুরু হওয়া বাগবিতন্ডা থেকে আজ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত তিনদফায় মারামারি হয়েছে। এ সব মারামারির ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ ব্যাচের (২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের) শিক্ষার্থী।

এ সব ঘটনা মিটমাট করার জন্য সংশ্লিষ্ট হলগুলোর ছাত্রলীগের নেতাদের ওপর নির্ভর করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের প্রাধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ হেল কাফী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা ঘটনা শুনেছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল এবং আমার হলের ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা বিষয়টি মিটমাটের জন্য সময় চেয়েছেন। আমরা সময় দিয়েছি।’

সংশ্লিষ্ট হলগুলোর প্রশাসন সূত্র জানায়, গত রোববার রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ক্যান্টিনে খেতে যান বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের ৯ শিক্ষার্থী। তাঁরা ক্যান্টিনে খেতে বসার ‘নিয়মকানুন’ মানেননি- এই অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী নিপাতুল ইসলামকে চড়-থাপ্পড় দেন ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের মিশান শিকদার ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের আব্দুল্লাহ আল সা’দ।

আরও পড়ুন: মিলছে না এমপিও, পেশা বদলাচ্ছেন প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষকরা

এ ঘটনার পর সোমবার রাত দেড়টার দিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের সামনে ঘুরতে যান পাঁচজন শিক্ষার্থী। তাঁরা হলেন বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক ছাত্র ও উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী রবিন রহমান, অর্থনীতি বিভাগের মোহাম্মদ মুগ্ধ, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিহাব হাসিব এবং দুইজন ছাত্রী। এ সময় সেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী যান। তাঁদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রবিনকে চড়-থাপ্পড় দেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের সাকিবুল ইসলাম ওরফে ফারাবী। সাকিবুল পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী।

এ ঘটনার জেরে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ও মানবিকী অনুষদ ভবনের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন সাকিবুল ইসলাম। এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, মীর মশাররফ হোসেন হল ও শহীদ সালাম বরকত হলের ৩০-৩৫ জন শিক্ষার্থী তাঁর পথ আটকান। তাঁদের মধ্যে ১১ শিক্ষার্থী সাকিবুলকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা সাকিবুলকে উদ্ধার করেন।

এই শিক্ষার্থীরা হলেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের আব্দুল্লাহ আল সা’দ, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের মিশান শিকদার ও মেহেদী সাফি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের আজিম সাকিব, উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের রবিন রহমান, অর্থনীতি বিভাগের মোহাম্মদ মুগ্ধ, মার্কেটিং বিভাগের রাহাত আলম ওরফে রিজভী ও শহিদুল ইসলাম। তাঁরা সবাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র। এছাড়া মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের মৃন্ময় দাস এবং শহীদ সালাম বরকত হলের আবাসিক ছাত্র এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিহাব হাসিবও এই মারধরে অংশ নেন।

আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের টিকার সনদ আছে কিনা, দেখবে কে?

এ বিষয়ে মারামারিতে অংশ নেওয়া দুই পক্ষের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা এক পক্ষ আরেক পক্ষকে দোষারোপ করেন। তবে দুই পক্ষই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘ঘটনা শুনেছি। কোন অভিযোগ এখনো পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’