বঙ্গবন্ধুকে জানতে তার ভাষণের প্রতিটি লাইন পড়তে হবে: ড. আতিউর রহমান
বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের মুক্তির বার্তা দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ভাষণগুলোর পরতে পরতে লুকিয়ে আছে অসামান্য শক্তি। বঙ্গবন্ধু তার জীবদ্দশায় বেশিরভাগ বক্তব্যই মন থেকে দিয়েছেন। যার কারণে তার ভাষণ ছিলো প্রাণবন্ত। তার ভাষণগুলো ছিলো মানুষের কণ্ঠস্বর। বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যের মাধ্যমে তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা বুঝতে পারা যায়।
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম জুমে ‘Bangabandhu’s Speeches: Domestic and Global Perspectives’ শীর্ষক ‘বঙ্গবন্ধু বক্তৃতামালা-১০’-এ বক্তারা এসব কথা বলেন।
‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস এন্ড লিবার্টি (বিএসএমআরআইপিএল)’ এবং ‘সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস (কারাস)’ যৌথভাবে এই বক্তৃতামালার আয়োজন করে।
বিএসএমআরআইপিএলর পরিচালক ও ইউজিসি অধ্যাপক ড. ফকরুল আলমের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন কারাসের পরিচালক ও ঢাবি কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন কারাসের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ও ঢাবি বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। এতে যৌথভাবে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমেদ আহসানুজ্জামান এবং ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রশিদ আসকারী।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আতিউর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুকে চিনতে ও জানতে হলে তার ভাষণের প্রতিটি লাইন পড়তে হবে। তার ভাষণ হৃদয় দিয়ে অনুভব করলে তাকে চেনা যাবে। বঙ্গবন্ধু তার জীবদ্দশায় লিখিত বক্তব্য খুব কম দিয়েছেন। কিছু বক্তব্য ছাড়া তার বেশিরভাগ বক্তব্যই তিনি মন থেকে দিয়েছেন। যার কারণে তার ভাষণ ছিলো প্রাণবন্ত। তার ভাষণগুলো ছিলো মানুষেরই কণ্ঠস্বর। এসময় তিনি বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন সময়ে দেওয়া ভাষণের উল্লেখ করে সেগুলোর বিশ্লেষণ তুলে ধরেন। বিএসএমআরআইপিএলর রিসার্চ ফেলো হাসান নিটোল অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক আহসানুজ্জামান বঙ্গবন্ধুর ভাষণের দেশীয় প্রেক্ষাপট আলোচনা করেন। এসময় তিনি এদেশের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে এবং ক্রান্তিলগ্নে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধু তার ভাষণের মাধ্যমে এদেশের মানুষকে মুক্তির বার্তা দিয়েছিলেন।
অধ্যাপক রশিদ আসকারী বঙ্গবন্ধুর ভাষণের বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট আলোচনা করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণগুলোর পরতে পরতে লুকিয়ে আছে অসামান্য শক্তি। বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যের মাধ্যমে তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা বুঝতে পারা যায়। তার বক্তব্যের মধ্যে রয়েছে বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের মুক্তির বার্তা। এজন্যেই বঙ্গবন্ধুকে ‘রাজনীতির কবি’ বলা হয়। তার বক্তব্য এখন বৈশ্বিক সম্পদ। মানুষের প্রতি ভালোবাসাই তার রাজনীতির মূল শক্তি। এটিই তাকে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের দরবারে উচ্চ স্থানে আসীন করেছে। এসময় তিনি ১৯৭০ থেকে ১৯৭৪ সালের মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে দেওয়া বঙ্গবন্ধুর গুরুত্বপূর্ণ চারটি ভাষণের তাৎপর্য তুলে ধরেন।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ফকরুল আলম বলেন, বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যগুলো আমাদের জন্যে একটা অমূল্য সম্পদ। তার ভাষণগুলো নিয়ে অনেক গবেষণার সুযোগ রয়েছে। অনুবাদের মাধ্যমে তার ভাষণগুলো বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে ছড়িয়ে দিতে হবে।