খাবার লবণে মিলছে প্লাস্টিক: গবেষণা

খাবার লবণে মিলছে প্লাস্টিক
খাবার লবণে মিলছে প্লাস্টিক  © সংগৃহীত

বাজারে নামকরা ব্র্যান্ড ও খোলা লবণে আণুবীক্ষণিক প্লাস্টিকের উপস্থিতি মিলেছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন একদল গবেষক। আন্তর্জাতিক প্রকাশনা জার্নাল ‘ইনভাইরনমেন্টাল অ্যাডভান্সেস’এ গবেষণা নিবন্ধটি ‘প্রলিফেরেশন অব মাইক্রো-প্লাস্টিক ইন কমারশিয়াল সি-সল্ট ফ্রম দ্য ওয়াল্ড লংগেস্ট সি-বিচ অব বাংলাদেশ’ নামে ১৫ জানুয়ারি প্রকাশিত হয়।

গত বছরের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে দেশের নামকরা ১০ ব্র্যান্ডের লবণসহ ১৩ স্যাম্পল বিভিন্ন সুপার মার্কেট ও স্থানীয় দোকান থেকে সংগ্রহ করে গবেষণা চালানো হয়। ব্র্যান্ডের ও ‘খোলা’ উভয় লবণে আণুবীক্ষণিক প্লাস্টিক পাওয়া গেছে। ব্র্যান্ডের লবণের তুলনায় খোলা লবণে প্লাস্টিকের মাত্রা বেশি মিলেছে।

আরও পড়ুন: চাকরির পেছনে না ছুটে কৃষিকাজে সফল নোবিপ্রবির শাকিল

গবেষণাটি পরিচালনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শফি মুহাম্মদ তারেক, সহযোগী অধ্যাপক ড. ফাহমিদা পারভিন এবং একই বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী জয়শ্রী নাথ ও তামান্না হোসেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, বঙ্গোপসাগর থেকে বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করা খাবার লবণে পলিস্টেরিন, ইথিলিন-ভিনাইল অ্যাসিটেট, পলিথিলিন, নাইলন, পলিথিলিন টেরেপথ্যালেট পাওয়া গেছে। এই আণুবীক্ষণিক প্লাস্টিকের মাত্রা বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি।

দেশে প্রতি কেজি সামুদ্রিক লবণে ৩৯০ থেকে ৭ হাজার ৪০০ আণুবীক্ষণিক প্লাস্টিক পাওয়া গেছে। এসব প্লাস্টিকের মধ্যে ৫৯ শতাংশ ফাইবার আকৃতির, ৩৫ শতাংশ খণ্ড-বিখণ্ড এবং ৩৮ শতাংশ স্বচ্ছ এবং ৩৫ শতাংশ নীল রঙের।

বঙ্গোপসাগরে পর্যটকদের ফেলে যাওয়া প্লাস্টিক দ্রব্য, নিত্য ব্যবহার্য পণ্যে মাইক্রো এবং ন্যানো পর্যায়ের কিছু প্লাস্টিক থাকে যা লবণে আণুবীক্ষণিক প্লাস্টিকের জন্য অধিক পরিমাণে দায়ী।

আরও পড়ুন: যে গ্রামের সব নারীই সুন্দর, কিন্তু পাত্রের অভাবে হচ্ছে না বিয়ে

মানব শরীরে আণুবীক্ষণিক প্লাস্টিক দীর্ঘদিন ধরে থাকে। এতে অন্যান্য ক্ষতিকর অণুজীব তার ওপর বাসা বাধার সুযোগ পায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এসব প্লাস্টিকের কণা থেকে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হয়, যা হরমোন সমস্যা সৃষ্টি এবং স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

এ বিষয়ে প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. শফি মুহাম্মদ তারেক বলেন, মাইক্রো প্লাস্টিকের আধিক্য দূর করতে প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনায় অধিক নজর দেওয়া দরকার। বঙ্গোপসাগরের পানিতে যেহেতু ইতোমধ্যেই বেশি পরিমাণে প্লাস্টিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে তাই লবণ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিশোধনের জন্য আরও উন্নত যন্ত্র ব্যবহার করতে হবে। সর্বোপরি জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সরকারকে নজর রাখতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ