ফেল করেও রাবিতে ভর্তি হয়েছেন ৭১ শিক্ষার্থী
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটায় নীতিমালা পরিবর্তন করে অকৃতকার্য ৭১ শিক্ষার্থীকে ভর্তি করার অভিযোগ উঠেছে। পাস নম্বর কমিয়ে বিশেষ এই সুবিধা নিয়েছেন পিছিয়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত পরিচ্ছন্নতাকর্মী, মালি থেকে শুরু করে অধ্যাপকও। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন এবং যোগ্যরা ভর্তির সুযোগ হারাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সর্বোচ্চ নম্বরধারী শিক্ষার্থীরাই ভর্তির সুযোগ পাওয়ার কথা থাকলেও অভিযোগ উঠেছে এবার অনেকে ভালো ফল করেও পছন্দের বিভাগ পাননি। আবার অনেকে ফেল করেও ভর্তি হয়েছেন ভালো বিভাগে।
জানা গেছে, গত ৬ ডিসেম্বর উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারের সভাপতিত্বে ভর্তি পরীক্ষা উপকমিটির এক সভায় পূর্বনির্ধারিত ন্যূনতম পাস নম্বর ৪০ থেকে কমিয়ে ৩০ করে প্রশাসন। মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর সন্তানদের বাড়তি সুবিধা দিতে এ নীতিমালা পরিবর্তন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আরো পড়ুনঃ এখনই বন্ধ হচ্ছে না রাবি, চলমান থাকবে ক্লাস-পরীক্ষা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ৪ থেকে ৬ অক্টোবর ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৪ হাজার ১৭৩টি আসনের বিপরীতে ১ লাখ ১ হাজার ৩৮২ শিক্ষার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বহুনির্বাচনী পদ্ধতিতে ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় সব শিক্ষার্থীর (কোটাসহ) পাস নম্বর নির্ধারিত ছিল ৪০। কিন্তু পোষ্য কোটাধারীদের জন্য পরে তা কমিয়ে ৩০ নম্বর করা হয়।
ভর্তি পরীক্ষা উপকমিটি সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা হিসেবে মোট আসনের ৫ শতাংশ বরাদ্দ থাকে। ন্যূনতম পাস করলেই সাধারণত তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পান। তবে এবারের ভর্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্য ৭১ শিক্ষার্থীর ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।
বিশেষ এ সুবিধা পেতে আবেদনকারীদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক রয়েছেন। তালিকায় ৩০ থেকে ৪০ নম্বর পাওয়া পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ৪৭টি আবেদনের মধ্যে নয়টিই করেছেন শিক্ষক শ্রেণির অভিভাবকরা। এর মধ্যে ছয়জন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পদমর্যাদার শিক্ষক। বাকি তিনজন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের শিক্ষক। শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের এ বিশেষ সুবিধা দেওয়াকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া বাকিদের সঙ্গে প্রতারণা অভিহিত করেছেন অন্য শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, কোটার আওতায় থাকা শিক্ষার্থীরা এমনিতেই নানা সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। এরপর পাস নম্বর কমানোর কোনো বৈধতা থাকতে পারে না।
শিক্ষার্থী উজ্জ্বল আলী বলেন, 'ভর্তি পরীক্ষায় পাস করতে পারে না এমন কাউকে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগই দেওয়া ঠিক না। হাড় ভাঙা পরিশ্রমের পরই একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেন। অথচ শুধুমাত্র পোষ্য কোটার জোরে সুবিধা নিয়ে অযোগ্যরা ভর্তি হবেন, এটা অন্যায়।
এ বিষয়ে রাবির অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলন, পোষ্য কোটার বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই চলে আসছে। সামনে আমরা এর থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করব।