ঢাবিতে আসন কমানোর সুপারিশে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন সংখ্যা কমানোর সুপরিশ করেছে ডিনস কমিটি। এমন সুপারিশের পর থেকেই শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
তারা বলছেন, দেশের ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার স্বপ্ন সবাই দেখে। সময়ের সাথে সাথে যেখানে আসন সংখ্যা বাড়ানোর কথা সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়টি আসন সংখ্যা কমাচ্ছে। এতে করে অনেক শিক্ষার্থীর ঢাবিতে পড়ার স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, সময়ের সাথে সামঞ্জস্য নয়; এমন অজুহাতে বিশ্ববিদ্যালয়টি আসন কমানোর সুপারিশ করেছে। অথচ এই ডিনস কমিটির অনেকেই সময়ের সাথে সামঞ্জস্য এমন বিষয় নিয়ে পড়ালেখা করেছেন। তারা সুযোগ পেলে আমরা কেন সুযোগ পাব না।
আরও পড়ুন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন কমছে ১ হাজার
মোস্তফা শাহরিয়ার নামে এক শিক্ষার্থী জানান, আরবি, ফারসি কিংবা অন্যান্য বিষয় পড়েও বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা যায়। দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে আরবি বিষয়ে পড়ালেখা করানো হয়। তাহলে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেন এই বিষয়গুলো পড়ানো হবে না? বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের ইচ্ছেমতো সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে।
ফরজানা ইয়াসমিন নামে আরেক শিক্ষার্থী জানান, যদি আসন কমাতেই হয় তাহলে পদার্থ, রসায়ন, গণিত, আইন সহ অন্যান্য যে বিষয়গুলো আছে সেগুলোতে সমান সংখ্যক আসন বাড়াতে হবে। হুট করে এক হাজার আসন কমানো কোনো ভাবেই কাম্য নয়। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আরেকবার ভাবা দরকার।
আরও পড়ুন: ঢাবির ডিনস কমিটির সভায় দ্বিতীয়বার পরীক্ষা নিয়ে আলোচনা হয়নি
এর আগে গতকাল বুধবার ঢাবির ডিনস কমিটির এক বিশেষ সভায় ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের জন্য আসন সংখ্যা পুনর্নির্ধারণ করা হয়। আগামী শিক্ষাবর্ষে প্রায় এক হাজার আসন কমানোর সুপারিশ করা হয়।
সভা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, এখন যে সাত হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়, এত শিক্ষার্থী আর ভর্তি করা হবে না। প্রতি শিক্ষাবর্ষে ছয় হাজারের কিছু বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। শ্রেণিকক্ষে যেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মনোযোগ থাকে—এমন নানা বিষয় বিবেচনায় শিক্ষার্থীসংখ্যা পুনর্বিবেচনার এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আসনসংখ্যার বিষয়ে মতামত বিভাগগুলো থেকেই এসেছে।
ডিনস কমিটির সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ও বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: চবিতে এক যুগে ১৬ জনের আত্মহত্যা
সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় সংশ্লিষ্ট বিভাগ/ইনস্টিটিউট ও অনুষদসমূহের চাহিদা/প্রস্তাব পর্যালোচনা করা হয় এবং ভর্তির যৌক্তিক আসন সংখ্যা নির্ধারণ বিষয়ে সুপারিশ প্রণীত হয়। এই সুপারিশ অনুমোদনের জন্য পরবর্তী একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় পেশ করা হবে।
শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন ও যথোপযুক্ত দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্ষমতা ও সামর্থ্য এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।