৩১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৯:১৮

বছরজুড়ে আলোচনার তুঙ্গে ছিল চবি শাখা ছাত্রলীগ

চবি শাখা ছাত্রলীগ   © লোগো

কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রায় ১৬ মাস বন্ধ থাকলেও নানান ঘটনায় আলোচিত হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগ। দফায় দফায় সংঘর্ষ, পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন কর্মসূচি, শৃঙ্খলা ভঙ্গ, অপকর্মের অভিযোগে বহিষ্কার এবং সাংবাদিককে হুমকিসহ বিভিন্ন কারণে আলোচনার তুঙ্গে ছিল সংগঠনটি।

বিদায়ী বছরের শেষ কয়েকমাসে কমপক্ষে ৭ বার সংঘর্ষে জড়িয়েছে চবি ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক বিভিন্ন গ্রুপ। এর মধ্যে রয়েছে বিজয়, সিএফসি,সিক্সটি নাইন, বাংলার মুখ ও একাকার। এসব ঘটনায় ২৪ জনের বেশি আহত হয়েছে।

২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ, রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সভায় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং ধারালো অস্ত্র দ্বারা একজনকে আহত করা এবং মারামারির অভিযোগে সিএফসি ও সিক্সটি নাইনের ১২ জনকে ৬ মাস ও ১ বছর মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়। এর মধ্যে ১০ অক্টোবর মারধরের অভিযোগ, ১৪ অক্টোবর রাতে এক শিক্ষার্থীকে মারধর, ১৫ অক্টোবর সংঘর্ষ ও কুপিয়ে আহত এবং ১৭ অক্টোবর মারধরের ঘটনায় বহিষ্কার করা হয় তাদের। বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলে এবং ক্যাম্পাসে অবস্থান না করার নির্দেশনা ছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। কিন্তু বহিষ্কৃতদের হলে অবস্থানসহ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতেও দেখা গেছে।

আরও পড়ুনঃ বছর জুড়ে মৃত্যুর মিছিল ছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত না মেনে পরীক্ষা দেওয়া নিয়ে অনুসন্ধান করতে গেলে ৭ ডিসেম্বর সাংবাদিক ইফতেখায়রুল ইসলামকে প্রক্টর পরিচয়ে হুমকি দেয় উপগ্রুপ সিএফসির কর্মী বহিষ্কৃত তৌহিদুল ইসলাম। তৌহিদ ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী। ঘটনার ১ সপ্তাহের মাথায় ১২ ডিসেম্বর তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে বিষয়টি এখনো মীমাংসা হয়নি।

এদিকে ১৫ ডিসেম্বর প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের একটি চিঠি গণমাধ্যমের হাতে আসে। মানবিক দৃষ্টিকোণ বিবেচনায় বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয় বলে চিঠিতে উল্লেখ ছিল। কিন্তু এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার, ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ, রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সদস্যরা। কয়েকটি বিভাগ বিষয়টি জানাতে রাজি হয়নি। 

সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোতে যোগাযোগ করে জানা যায়, বিভাগগুলো বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের চিঠি ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে গ্রহণ করেছে। এখন পর্যন্ত বহিষ্কৃত ১২ জনের মধ্যে ৭ জনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

২০১৯ সালের ১৫ জুলাই চবি শাখার দুই সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এক বছরের মধ্যে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশনা থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। আড়াই বছর পর গত ৯ নভেম্বর থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিভিন্ন পদের জন্য আগ্রহী নেতাকর্মীদের জীবনবৃত্তান্ত চেয়ে বিবৃতি দেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ২০১ পদের বিপরীতে এক হাজার ৪০০ জন আগ্রহী প্রার্থী জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে শাখা ছাত্রলীগ। তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনো ঘোষিত হয়নি। এ নিয়ে বিভিন্ন গ্রুপে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এ নিয়ে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে পূর্নাঙ্গ কমিটি দেওয়ার চেষ্টা করছি। আগ্রহীদের বিষয়ে যাচাই-বাছাই করতে সময় লাগছে।

এভাবে বছরজুড়ে আলোচনার তুঙ্গে ছিল চবি শাখা ছাত্রলীগ।