এবার ঢাবির হলে বিবাহিত এক ছাত্রীর সিট বাতিলের অভিযোগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রীদের হলে বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা শিক্ষার্থীদের থাকার বিষয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের এক বিবাহিত ছাত্রীর সিট বাতিল করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শুধু তাই নয়, ওই ছাত্রীকে নানাভাবে মানসিক নির্যাতন করারও অভিযোগ উঠেছে ওই হলের দুইজন আবাসিক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত দুই শিক্ষিকা হলেন অদিতি শামস ও ইলা ইসমাইল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি বিবাহিত হওয়ার কারণে হল থেকে আমার সিট কেটে দিয়েছে। পরে এই বিষয়টি নিয়ে আমি হলের প্রভোস্ট ম্যামের কাছে একটি আবেদনপত্র লিখি যাতে আমাকে হলে থাকতে দেওয়া হয়। কারণ বর্তমানে আমার পরীক্ষা চলছে।
“আবেদনপত্র নিয়ে অফিসে গেলে অদিতি শামস ম্যাডাম আমার আবেদন পত্র ছিড়ে ফেলেন। পরে আমাকে দিয়ে একটা মিথ্যা আবেদনপত্র লিখে নিয়ে সেখানে সাইন করতে বলেন এই মর্মে যে, আমি হল খোলার এক মাস পরে সিটে উঠেছি। এটা নাকি আমার অপরাধ। এছাড়াও আরও অনেক উদ্ভট কথা বলে আমার উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করেন। গত মাসে (নভেম্বর) ম্যাম আমার নাম কেটে দিয়েছেন এজন্য আমি সাইন করিনি। একথা বলায় অদিতি ও ইলা ম্যাম বলল, ও তুমি এত নিয়ম মানো আর এই নিয়ম মানো না। আমাদের না বলে সাংবাদিকদের বলো, ভিসির কাছে যাও।”
“এসময় অদিতি শামস ম্যাডাম ধমক দিয়ে বলেন, তোমার সাথে অনেক নরম করে কথা বলেছি। আর কোন নরম করে কথা হবে না। তুমি আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছো। এতে কার মান-সম্মান গেছে? আমাদের যায় নাই, তোমার কাছে। এখন তুমি মুখ দেখাবা কেমন করে।”
ওই ছাত্রী আরও বলেন, নাম কেটে (সিট বাতিল) দেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে সেটিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে তারা (অদিতি ও ইলা) নরমসুরে বলেন, আমরা তো তোমার নাম কাটি নাই। কই দেখো আমরা কাটি নাই। তিনি আরও বলেন, তারা কেটে দেওয়া ক্রস চিহ্নকে স্টার চিহ্ন করে আমাকে দেখাচ্ছে।
পরে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী শামসুন্নাহার হলের সদস্য সাবেক ভিপি তাসনিম আফরোজ ইমির কাছে ঘটনাটি খুলে বলেন। এ বিষয়ে বলেন, শিক্ষকদের আচরণ যে এত বাজে হতে পারে সেটা আমি ওর (ভুক্তভোগী) সাথে কথা বলে বুঝতে পেরেছি। এগুলো কোন সভ্য মানুষের ব্যবহার হতে পারে না। তাকে মানসিকভাবে, একদম বাজেভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে। সে আমার সাথে কথা বলার সময় অনেক কান্না করেছে।
ইমি আরও বলেন, তাকে এমনভাবে টর্চার করা হয়েছে যার কারণে সে এখন মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। তাকে বিভিন্নভাবে ভয় দেখানো হয়েছে। এমনকি একটি আবেদনপত্র লেখার জন্য তাকে বসতে পর্যন্ত দেয়নি ইলা ও অদিতি শামস ম্যাডামরা।দাঁড়িয়ে আবেদনপত্র লিখতে হয়েছে তাকে।
এ বিষয়ে জানতে কুয়েত-মৈত্রী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নাজমুন্নাহারকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ ঘটনাটি অস্বীকার করে ওই হলের আবাসিক শিক্ষিকা ইলা ইসমাইল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা হলের কোন শিক্ষার্থীকে মানসিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করিনি।
আরেক আবাসিক শিক্ষিকা অদিতি শামস দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, হলের শিক্ষার্থীদের আমাদের সন্তানদের মতো দেখি। তাই এরকম আচারণ করার কোন প্রশ্নই উঠে না।