ঢাবিকে বিশ্ব কুর্ণিশ জানায়: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে পূর্ববাংলার মধ্যবিত্ত শ্রেণির বিকাশ, ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদ গঠন এবং রাষ্ট্রগঠনে ‘বিরল দৃষ্টান্ত’ রাখায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সারা বিশ্ব ‘কুর্ণিশ’ জানায়।
বুধবার (১ ডিসেম্বর) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, ভাষা প্রেমের ভিত্তিতে ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদ গঠন এবং রাষ্ট্রগঠনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যক্ষ অবদান আমার আলোচনার অপেক্ষা করে না। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও ধর্মনিরপেক্ষ ভাষাকেন্দ্রিক স্বাদেশীকতার গৌরব প্রতিষ্ঠায় আপনারা যা করেছেন, তাকে গোটা বিশ্ব কুর্ণিশ জানায়।
তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় উচ্চশিক্ষা ও জনজীবনের ইতিহাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ও অবস্থান ‘অত্যন্ত গৌরবময়’।
তিনি আরও বলেন, বাস্তবিকই দক্ষিণ এশিয়ার এই পূর্বপ্রান্তে একটি শিক্ষিত, মধ্যবিত্ত শ্রেণীর নির্মাণে, দেশবোধ ও জনবোধের সৃজনে বিশ্ববিদ্যাকে সংযুক্ত করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অনুপম।”
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মলগ্ন থেকেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তার নাড়ীর সংযোগ ছিল। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলেও ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত পূর্ববঙ্গের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবিচ্ছিন্ন সংযোগ ছিল। ১৯৪৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধাত্রীভূমি থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কয়েকশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে পায় তার নিজস্ব চারণভূমি হিসেবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মলগ্নের ইতিহাস তুলে ধরেন অধ্যাপক সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ১৯১৭ সালে বড়লাট ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর চেমস ফোর্ড কলকাতা বিশ্ববিদ্যালেয়কে ঢেলে সাজানোর জন্য একটি কমিশন গঠন করলেন, যারা মাথায় রইলেন বিলেতের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এমি স্যাডলার। এই স্যাডলার কমিশনের অন্যতম সুপারিশ ছিল যত শিগগির সম্ভব ঢাকায় একটি টিচিং ইউনিভার্সিটি স্থাপন করতে হবে।
গঠনের দিক থেকে এই নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হবে ইউনিটারি। শতবর্ষ আগে ১৯২১ সালে এভাবেই ঢাকায় গড়ে উঠলো এই মোহনীয় শিক্ষাকেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু পূর্ববঙ্গের বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ রয়ে গেল কলকতা বিশ্ববিদ্যালয়ের। ১৯৪৭ সালের পর থেকে এই সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ ও অ্যাফিলিয়েশনের ভার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থানান্তরিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বলে জানান তিনি।