নানা আয়োজনে জাবিতে ‘কালো দিবস’ পালিত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) নানা আয়োজনে ‘কালো দিবস’ পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে মৌন মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট।
শনিবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে মিছিলটি শুরু হয় হয়ে শহীদ মিনারের পাদদেশে শেষ হয়। তারপরে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে কালো দিবস পালন সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
২০১০ সালে ২৭ নভেম্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবৃত্তি সংগঠন ‘ধ্বনি’র কক্ষে আগুন দেয়ার ঘটনায় প্রতিবছর এই দিনে ‘কালো দিবস’ পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
এর পরদিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের লোকদের সামনেই মুক্তমঞ্চে নাটক চলাকালে হামলা চালায় ছাত্রলীগ কর্মীরা। এ ঘটনার বিচার দাবিতে পরবর্তী কয়েকমাস আন্দোলনও চলে।
‘কালো দিবস’ পালনের মিছিলে সাংস্কৃতিক জোটের অন্তর্ভুক্ত সংগঠনগুলো ছাড়াও বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবৃত্তি সংগঠন ধ্বনি-এর সাধারণ সম্পাদক ইমরান হাসান শাহরিয়ার বলেন, তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে যেই দুর্বৃত্তায়ন সংঘটিত হয়েছিলো, সেই ভস্মীভুত ছাই থেকে ফিনিক্স পাখির মতো আবারও উঠে দাঁড়িয়েছে ধ্বনিসহ জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের প্রত্যেকটি সাংস্কৃতিক সংগঠন।
তিনি আরও বলেন, শোককে শক্তিতে পরিণত করে স্বীয় আদর্শে আমরা আবার বলীয়ান হয়ে উঠেছি। মেরুদণ্ড টানটান করে দৃপ্ত কন্ঠে আওয়াজ তুলেছি সকল অন্যায় ও অসংগতির বিরুদ্ধে। আমরা হেরে যেতে শিখিনি।
সমাবেশে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি দীপঙ্ককর চক্রবর্তী দ্বীপ বলেন, তৎকালীন ভিসির বিরুদ্ধে গড়া আন্দোলন দমাতে প্রশাসন যে ক্ষত সৃষ্টি করেছে, সেই ক্ষত আমাদের শক্তি যোগায়। মুক্তিযুদ্ধে যেমন সাংস্কৃতিক কর্মীদের হত্যা করে আন্দোলন থামাতে চেয়েছিল অপশক্তি একই ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও সেই কূটকৌশল অবলম্বন করেছিল। কিন্তু আমরা দমে যায়নি। আমাদের হাতিয়ার আমাদের কন্ঠ। যা থামবার নয়।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৌমিক বাগচী, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাদিকুর রহমান প্রমুখ।
মৌন মিছিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রায় ৩০ জন কর্মী অংশগ্রহণ করেন।