ঢাবির শতবর্ষ পূর্তিতে প্রশাসনের ১৮ উদ্যোগ, মিট দ্যা প্রেসে জানালেন ভিসি
আগামী ১ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণ উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। এ উপলক্ষ্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান আজ শনিবার (২০ নভেম্বর) প্রশাসনিক ভবনস্থ প্রফেসর আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এক ‘মিট দ্যা প্রেস’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। এসময় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ এবং প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল উপস্থিত ছিলেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব উপযোগী বিশ্ববিদ্যালয় বিনির্মাণ এবং দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন কর্মপ্রয়াস গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে চলেছে। এসবের মধ্যে রয়েছে-
ঢাবি শতবর্ষ পূর্তি ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকাশনা
ঢাবি শতবর্ষ পূর্তি ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বিভিন্ন গ্রন্থ ও সংকলন প্রকাশিত হবে। এগুলো হলো: ‘The University of Dhaka and the Making and Shaping of Bangladesh’ শীর্ষক গ্রন্থ, ‘শতবর্ষের আলোয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ স্মারক সংকলন, সমাবর্তন বক্তা এবং মাননীয় উপাচার্যদের বক্তব্য নিয়ে একটি সংকলনগ্রন্থ, শতবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দুর্লভ আলোকচিত্র নিয়ে ‘ফটো অ্যালবাম’, ‘শতবর্ষের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : অর্জন ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নির্বাচিত প্রবন্ধ নিয়ে প্রবন্ধ সংকলন, কবিতা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নির্বাচিত কবিতা নিয়ে ‘কবিতা সংকলন’ ইত্যাদি।
৬টি আন্তর্জাতিক সেমিনার (ওয়েবিনার) অনুষ্ঠিত
দেশে ও বিদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপ্রতিষ্ঠিত অ্যালামনাই এবং বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও গবেষকদের নিয়ে ঢাকায় History of the University of Dhaka & Higher Education in Bangladesh, Sciences for Society, Arts, Literature & Culture, Business for Sustainability, Social Sciences for Life and Living, Futures of Higher Education শিরোনামে ৬টি আন্তর্জাতিক সেমিনার (ওয়েবিনার) অনুষ্ঠিত হয়।
বিশেষ গবেষণা প্রকল্প
প্রকল্পের আওতায় ২৫০টির অধিক গবেষণা পরিচালিত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন সেন্টার, বিভাগ ও ইনিস্টিটিউট এসব গবেষণা পরিচালনা করছে।
‘মাস্টার প্ল্যান’ প্রণয়ন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা পরিবেশ এবং অত্যাবশ্যক অবকাঠামোসহ সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ ‘মাস্টার প্ল্যান’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এ মাস্টার প্ল্যানের আওতায় ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা রয়েছে বটে, তবে এর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে গবেষণাগার, লাইব্রেরি, পরিবেশ-প্রকৃতি, পরীক্ষার হল ও শ্রেণিকক্ষসহ নানা শিক্ষা ও গবেষণা সহযোগী উপাদানের আধুনিকায়ন । শতবর্ষের প্রাক্কালে এই মাস্টার প্ল্যান আমাদের সার্বিক উন্নয়নের একটি মাইলফলক।
সেন্টিনারি মনুমেন্ট
শতবর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে ‘শতবার্ষিক স্মৃতিস্তম্ভ’ (সেন্টিনারি মনুমেন্ট), ‘Monument of Infinity Reflecting Vastness, Inclusiveness and Magnanimity’(অসীমতার স্তম্ভে বিশালতা, অন্তর্ভুক্ততা ও উদারতা) তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যবীমা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়মিত শিক্ষার্থীকে প্রথমবারের মত স্বাস্থ্যবীমার আওতায় আনা হয়েছে। এর ফলে দায়িত্বশীল গ্র্যাজুয়েট হিসেবে তারা নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ সমাজ ও দেশের সার্বিক উন্নয়নে নেতৃস্থানীয় সচেতন ভূমিকা রাখতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় বাৎসরিক মাত্র ২৭০ টাকা প্রিমিয়াম প্রদান করে এখন থেকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের সুযোগ পাবেন। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সকল নিয়মিত শিক্ষার্থীকে স্বাস্থ্যবীমার আওতায় নিয়ে আসা বাংলাদেশে তো বটেই, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় একটি উদাহরণ বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
‘বঙ্গবন্ধু ওভারসীস স্কলারশিপ’ পুনঃপ্রবর্তন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিদেশে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু ওভারসিস স্কলারশিপ’ পুনঃপ্রবর্তন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার গুণগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে শিক্ষকদের বিদেশে উচ্চ শিক্ষার্থে পিএইচ.ডি প্রোগ্রামে অধ্যয়নের জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে ‘বঙ্গবন্ধু ওভারসিস স্কলারশিপ’ প্রবর্তন করেছিলেন। ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের পর এটি বন্ধ হয়ে যায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালে এই স্কলারশিপ পুনঃপ্রবর্তনের নির্দেশ দেন।
‘বঙ্গবন্ধু পিএইচ.ডি. ছাত্র বৃত্তি’ চালু
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের পিএইচ.ডি.গবেষকদের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু পিএইচ.ডি.ছাত্র বৃত্তি’ চালু করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের পিএইচ.ডি. গবেষকগণ এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। গবেষণা কর্মের বিষয়বস্তু ও পরিধি অবশ্যই বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের জীবন ও অবদানসহ বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও আন্দোলন ভিত্তিক হতে হবে। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের অর্থায়নে এই বৃত্তির আওতায় প্রত্যেক গবেষককে মাসিক ৩০ হাজার টাকা গবেষণাবৃত্তি প্রদান করা হবে। এছাড়া, গবেষণা থিসিস জমা দেয়ার পর তাদের এককালীন সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার টাকা প্রদান করা হবে।
‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস এন্ড লিবার্টি’ প্রতিষ্ঠা
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন, আদর্শ, সংগ্রাম, ত্যাগ, দেশপ্রেম, নেতৃত্বসহ সকল বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানের গবেষণার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস এন্ড লিবার্টি’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং ৪র্থ-শিল্পবিপ্লব উপযোগী মানব সম্পদ তৈরির ক্ষেত্রে এই ইনস্টিটিউট গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখবে। প্রচলিত প্রতিষ্ঠানের বাইরে স্বতন্ত্র ও ভিন্ন আঙ্গিকের প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই ইনস্টিটিউটকে গড়ে তোলা হবে। শুধু জাতীয় পর্যায়ে নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও শিক্ষা ও গবেষণার নানা শাখায় এই প্রতিষ্ঠান নেতৃত্ব দেবে। ইতোমধ্যে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস এন্ড লিবার্টি’-এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও গবেষকবৃন্দের সমন্বয়ে ‘বঙ্গবন্দু বক্তৃতামালা’-এর আয়োজন করা হচ্ছে।
‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বর্ণপদক’ প্রবর্তন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বর্ণপদক’ প্রবর্তন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস এন্ড লিবার্টি-এর বোর্ড অব গভর্নসের প্রথম সভায় এই স্বর্ণপদক প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। প্রতিবছর ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকীতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পদক প্রদান করা হবে। ২০২২ সাল থেকে এই পদক প্রদান শুরু হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস এন্ড লিবার্টি এই স্বর্ণপদক প্রদান করবে। শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য শুধুমাত্র বাংলাদেশের নাগরিকগণ এই ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বর্ণপদক’-এর জন্য মনোনীত হবেন। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ প্রতিষ্ঠা
ইতিহাসের মহানায়ক সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে একজন যথার্থ নেতৃত্বগুণ সম্পন্ন মানুষ হিসেবে দেশ ও দশের কল্যাণে পূর্ণরূপে আত্মনিয়োগ করতে যে মানুষটি পর্দার আড়ালে থেকে সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার ও নিরলস শ্রম দিয়েছেন, তিনি আর কেউ নন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। এই মহীয়সী নারীর অসাধারণ অবদানকে স্বীকৃতি প্রদানের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর নামে ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
সেন্টারের মূল উদ্দেশ্য হলো নারীর মর্যাদা, অবদান এবং ক্ষমতায়নের গুরুত্ব ও তাৎপর্য পর্যালোচনা করে সমাজকে আলোকিত করা এবং দেশ ও জাতির উন্নয়ন ঘটানো। এদেশের ও আন্তর্জাতিক পরিমÐলের প্রথিতযশা নারীদের অবদান ও কৃতিত্ব তুলে ধরে আগামী দিনের নারী অধিকার ও নেতৃত্ব, লিঙ্গ সমতা ও উন্নয়নসহ সমাজ, সংস্কৃতি ও রাজনীতির বিবর্তনের ক্ষেত্রকে বিকশিত করার লক্ষ্যে এই সেন্টার অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
শিক্ষা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থায় অটোমেশন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অটোমেশনের আওতায় আনা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ পরিচালিত DU-AIS Project-এর মাধ্যমে অটোমেশনের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়েরশিক্ষার্থীরা অনলাইনে তাদের বেতন ও যাবতীয় ফিসের টাকা জমা দিতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন, পেনশন, ইনকাম ট্যাক্স, ইন্স্যুরেন্স, ব্যাংক লোন, প্রভিডেন্ট ফান্ড, বেনিভোলেন্ট ফান্ড, শিক্ষকদের পরীক্ষা সংক্রান্ত বিল, বিভিন্ন ট্রাস্ট ফান্ডের হিসাবসব সকল আর্থিক লেনদেন এই অটোমেশনের ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন হবে। এছাড়া, সরকারের বিভিন্ন দফতর/সংস্থার চাহিদা মাফিক বিভিন্ন আয় ব্যায়ের হিসাব বিবরণী দ্রুততম সময়ে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
ইনোভেশন, ক্রিয়েটিভিটি এন্ড এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ সেন্টার প্রতিষ্ঠা
তরুণ প্রজন্মকে ইনোভেশন ও এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ বিষয়ে দক্ষ ও সক্ষম করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনোভেশন, ক্রিয়েটিভিটি এন্ড এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। একটি উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তামুখী বিশ্ববিদ্যালয় তথা বাংলাদেশ তৈরির জন্য ইনোভেশন, ক্রিয়েটিভিটি এন্ড এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ সেন্টার (আইসিই) কাজ করে যাচ্ছে।
সম্প্রতি উদ্যোক্তা উন্নয়নে এ সেন্টারের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া এবং বাংলাদেশ সরকারের মধ্যকার একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় Capacity Building of Universities in Bangladesh to Promote Youth Entrepreneurship শীর্ষক একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। কোরিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (কোইকা) এই প্রকল্পে অর্থায়ন করবে। এর আওতায় সেন্টার অব অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন আর্টস অ্যান্ড স্যোশাল সায়েন্সেস ভবনে একটি বিশ্বমানের এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ সেন্টার নির্মাণ কাজ শীঘ্রই শুরু হতে যাচ্ছে। এখানে সক্ষমতা উন্নয়নের (ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট) অংশ হিসেবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা, গবেষণা ও উদ্যোক্তা উন্নয়নে কারিকুলাম তৈরির কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই সেন্টার উদ্যোক্তামুখী সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি, সৃজনশীল পরিবেশ সৃষ্টি ও শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নির্মাণে ভূমিকা রাখবে।
‘গ্র্যাজুয়েট প্রমোশন অ্যান্ড স্কিল ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক কর্মসূচি গ্রহণ
গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ও প্রায়োগিক কর্মদক্ষতা, ভাষাদক্ষতা ও কর্পোরেট শিষ্টাচার জ্ঞান অর্জনসহ তাদের অধিকতর নিয়োগযোগ্য (employable) করে গড়ে তোলার জন্য গ্র্যাজুয়েট প্রমোশন অ্যান্ড স্কিল ডেভেলপমেন্টশীর্ষক এক বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তীব্র প্রতিযোগিতামূলক বাজারে নিজেদের মর্যাদাকর অবস্থান টিকিয়ে রাখা,এসডিজি অর্জনে ভূমিকা রাখতে সক্ষম দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে এই কর্মসূচির আওতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ/ইনস্টিটিউট নিজ নিজ গ্র্যাজুয়েটদের স্বার্থে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আন্তঃসম্পর্ক ও আন্তঃসহযোগিতার জন্য সমঝোতা চুক্তি বা বিনিময় চুক্তি সম্পাদন করবে এবং গ্র্যাজুয়েটদের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ করবে।
প্রথমবারের মতো বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন
এবার প্রথমবারের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছাড়াও রাজধানীসহ দেশের অন্য ৭টি বিভাগীয় শহরে ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদের ভোগান্তি ও আর্থিক সংশ্লেষণ অনেকটা লাঘব হয়েছে।
ভাইরোলজি বিষয়ে গবেষণা ল্যাব প্রতিষ্ঠা
বিশ্ববিদ্যালয়ের Centre for Advanced Research in Sciences (CARS) ভবনে কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষার জন্য যে আরটি-পিসিআর ল্যাব তৈরি করা হয়েছিল সেটিকে ভাইরোলজি বিষয়ে গবেষণার জন্য একটি বিশেষায়িত গবেষণা ল্যাবে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এর নাম বায়োলজিক্যাল হ্যাজার্ড অ্যানালাইসিস অ্যান্ড হেলথ রিসার্চ ল্যাবরেটরি। এসব উদ্যোগ কার্যকর হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদে মৌলিক গবেষণার কাজ বেগবান হবে; যা শতবর্ষী এ বিশ্ববিদ্যালয়টির একটি গবেষণাধর্মী বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে উঠতে ভূমিকা রাখবে।
কোভিড-১৯ টিকা
কোভিড-১৯ টিকার উন্নয়নসহ বিভিন্ন টিকা ও ওষুধ উৎপাদনের লক্ষ্যে সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চতর বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র (CARS) এবং এএফসি এগ্রো-বায়োটেক কোম্পানির মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। আমেরিকান কোম্পানি JND Biotech এবং Emergent Biotech এক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে।
‘আইটি হাব’ স্থাপন
একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা তথা চতুর্থ শিল্প বিপ্লব উপযোগী বাংলাদেশ গড়তে গবেষণা উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্য-প্রযুক্তি খাতে নতুন নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করার লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ‘আইটি হাব’ তৈরি করা হবে। এর মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে সর্বোপরি দেশের ও সময়ের প্রয়োজনে দক্ষ তথ্য প্রযুক্তিবিদ তৈরি করা যাবে। এই ‘আইটি হাব’-এর মাধ্যমে দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়গুলোকে সমন্বিত করে জাতীয় উন্নয়নে ভূমিকা রাখার সুযোগ তৈরি হবে। এটি হবে শিক্ষাখাতে বাংলাদেশের পরিবেশবান্ধব সবুজ প্রযুক্তির (Green Technology) তৈরি প্রথম ভবন।
SDGs ও Perspective Vision 2041
SDG-২০৩০ অর্জনে ও পরিপ্রেক্ষিত রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে বিশেষ শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম,পাঠক্রম উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম, মৌলিক ও প্রায়োগিক গবেষণা পরিচালনায় SDG বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে।