শিক্ষার্থীদের নিয়মিত অভিযানে ‘বহিরাগতমুক্ত’ থাকছে ঢাবি ক্যাম্পাস
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসের সড়কে ভারী যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং ক্যাম্পাস থেকে বহিরাগতদের নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির একদল শিক্ষার্থী। তাদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে সহযোগিতা করছে ঢাবির প্রক্টরিয়াল টিম ও শাহবাগ থানা পুলিশ। শিক্ষার্থীদের এ অভিযানে ফলও মিলেছে- কমেছে ভারী যান চলাচল এবং নেশাগ্রস্তদের উপস্থিতি।
গতকাল ১৫ নভেম্বর (সোমবার) রাত ১২টার দিকে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের অভিযানের ফলে কবি সুফিয়া কামাল হলের সামনে অবস্থিত ওভারব্রিজ, শামসুন্নাহার হল ও রোকেয়া হলের মাঝখানে অবস্থিত দুটি ছাউনি একদম ফাঁকা অবস্থায় আছে। কোন নেশাগ্রস্ত ও ভবঘুরের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি।
আগে এসব স্থানে ভবঘুরের লোকেরা নেশা করত বলে জানায় শিক্ষার্থীরা। তবে এই এলাকায় এখন নিয়মিত অভিযানে রোকেয়া হল, শামসুন্নাহার হল ও কবি সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্নতা অনেকটাই কেটে গিয়েছে।
কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আরজু আক্তার বলেন, এখন খুবই ভালো লাগতেছে। আগে আমরা আতঙ্ক নিয়ে চলতাম। এখন নিজেকে অনেক নিরাপদ লাগতেছে। আমরা চাই এই নিরাপদ পরিবেশ যাতে অব্যাহত থাকে।
বেগম রোকেয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সামিয়া সাইমিন রিমি বলেন, যাত্রী ছাউনীতে নেশাগ্রস্তদের দূর করায় আমি অনেক খুশি। কারণ আগে দেখা যেত তারা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বসে থাকতো। এতে করে রাস্তায় চলাচল করতে ভয় হতো। কারণ নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তো এদের হিতাহিত জ্ঞান বলে কিছু থাকতো না। যার ফলে এরা সহজেই চুরি-ছিনতাই সহ অনেক খারাপ কাজ করতো। এতে করে ক্যাম্পাসটাকে মাঝে মাঝে অনিরাপদ মনে হতো। তাই এদের দূর করায় প্রথম বর্ষের বন্ধু ও ঢাবি প্রশাসনকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
শুধু এইসব জায়গাই নয়, শিক্ষার্থীদের অভিযানে ঢাবি ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে অন্য কোন স্থানেও বহিরাগত ও নেশাগ্রস্তদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি গতকাল রাতে।
চলতি মাসের তিন তারিখ থেকে এ অভিযান শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের (২০১৯-২০ সেশন) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রথম বর্ষের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সারোয়ার সাইদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সত্যি এখন খুব ভালো লাগতেছে। এখন আর আগের মতো বহিরাগত, নেশাগ্রস্ত ও ভবঘুরে নেই। আমরা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে প্রতিদিন রাতে বের হই।
ক্যাম্পাস থেকে বহিরাগতদের উচ্ছেদে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপদ ক্যাম্পাস’ নামে একটা ফেসবুক গ্রুপ খোলা হয়েছে বলে জানান সারোয়ার। ‘এখানে আমাদের প্রতিদিনের কাজের আপডেট জানিয়ে দেওয়া হয়’, বলেন তিনি।
বহিরাগতদের উচ্ছেদে ঢাবি প্রক্টরিয়াল টিমের থেকে সহযোগিতা পেয়েছেন জানিয়ে এই শিক্ষার্থী বলেন, প্রক্টরিয়াল টিম আমাদের যথেষ্ট সাহায্য করেছে। তাদের এই ভূমিকা যাতে অব্যাহত থাকে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।