রাবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সমাহিত হলেন কথাসাহিত্যিক আজিজুল হক
সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাহিত হলেন আগুন পাখি খ্যাত উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক। মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) দুপুর ২টায় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী প্রাঙ্গনে তার মরদেহ সমাহিত করা হয়।
জানাজায় হাসান আজিজুল হকের ছেলে ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইমতিয়াজ হাসানসহ মরহুমের নিকট আত্মীয়, কবি, সাহিত্যিক, ভক্ত-অনুরাগী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে বেলা ১১টায় দর্শন বিভাগে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ, মেয়র, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন সংগঠন ও সর্বস্তরের মানুষ তার শেষকৃত্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলামসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিলসহ মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
একাডেমি পুরস্কারজয়ী বিশিষ্ট নাট্যজন অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিক বলেন, হাসান আজিজুল হক ছিলেন আমাদের এক বটবৃক্ষ। তিনি যখন চলে যান তখন আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যায়। এইরকম ছায়া দেবার মত মানুষের অভাব রয়েছে। তিনি কেবল একটি গল্প বা উপন্যাস লিখেই দায়িত্ব শেষ করেন নি। তিনি ছাত্রাবস্থা থেকেই অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরেও যত অশুভ শক্তি উত্থিত হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে রাজপথে সক্রিয় ছিলেন, অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।
এছাড়া হাসান আজিজুল হক শুধু একজন কথাসাহিত্যিকই নন, তিনি একাধারে একজন দাপুটে মঞ্চ অভিনেতা, পথ প্রদর্শক এবং অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে রাজনীতির মাঠে এক লড়াকু যোদ্ধা বলেও জানান তিনি
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, স্যার বাংলা সাহিত্যের যে মাপের মানুষ ছিলেন, তাতে একটা অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। আমরা যদি হাসান স্যারকে অনুধাবন করি, ধারণ করি তাহলে স্যার আমাদের কাছ থেকে তিনি হারিয়ে যাবেন না।
উল্লেখ্য, কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালে ভারতের বর্ধমান জেলার যব গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৮ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে দর্শনে স্নাতক এবং ১৯৬০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি লাগ করেন। তিনি ১৯৭৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন এবং ২০০৪ সালে প্রফেসর হিসেবে অবসরগ্রহণ করেন। তিনি ২০০৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ হিসেবে যোগদান করেন।