পরিবর্তন হচ্ছে বিতর্কিত শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা
ব্যাপকভাবে সমালোচিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা-২০১৭ অবশেষে পরিবর্তন হতে যাচ্ছে। নতুন নীতিমালা প্রণয়নে ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটিতে রাবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলামকে আহবায়ক ও রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালামকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, গত ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০৭তম সিন্ডিকেট সভায় এই কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শিক্ষক নিয়োগের নতুন এই নীতিমালা প্রণয়নে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন-ইউজিসির গাইডলাইন ও রাবির শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা-২০১৫ গুরুত্ব পাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সভায় বলা হয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি বিষয়ে যুগোপযোগী নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণে ইউজিসির নির্দেশনা অনুসরণ করে নতুন শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।
জানা যায়, ২০১৫ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছিল, যা পরে দেশব্যাপী মানসম্মত নিয়োগ নীতিমালা হিসেবে সমাদৃত হয়। সেই নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী অনার্স ও মাস্টার্সে ন্যূনতম সিজিপিএ ৩.৫ প্রাপ্তদের মধ্যে শুধু প্রথম থেকে সপ্তম স্থান অধিকারীরা শিক্ষকের জন্য আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু ২০১৭ সালের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সোবহান দায়িত্ব গ্রহণের পর ২০১৫ সালের শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালায়য় ব্যাপক পরিবর্তন আসে।
আবেদনের যোগ্যতা শিথিল করে নতুন শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়, যা শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা ২০১৭ নামে পরিচিত। এই নীতিমালা সব অনুষদের ক্ষেত্রে প্রথম থেকে সপ্তম স্থান অধিকারীদের আবেদনের বিষয়টি শিথিল করে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এছাড়া আবেদনের ক্ষেত্রে সিজিপিএ নিচে নামিয়ে আনা হয়। এমনকি কিছু অনুষদে আবেদনের যোগ্যতা সিজিপিএ ৩.০০ করা হয়, যা নিয়ে সারা দেশে চরম বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল।
এদিকে, গতবছর ইউজিসি এক তদন্তে জানায়, তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সোবহান শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা শিথিল করে তার মেয়ে ও জামাতাসহ, বিভিন্ন বিভাগে ৩৪ জন কম যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। পরে ওই বছরের শেষ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
নতুন নীতিমালা পরিবর্তনের বিষয়ে কমিটির আহবায়ক ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, আগামী সপ্তাহ থেকে আমাদের কাজ শুরু হবে। নতুন নিয়োগ নীতিমালা পরিবর্তনের জন্য ইউজিসির একটা গাইডলাইন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা-২০১৫ রয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা কী চান, এসব বিষয়ও বিবেচনায় রাখা হবে।