জাবিতে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বার্তা দিয়ে আলোচনা সভা
অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সম্প্রীতির বাংলাদেশের বার্তা দিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) সকালে জাবির সমাজবিজ্ঞান ভবনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের আয়োজনে উক্ত আলোচনা সভায় প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাবির সরকার ও রাজনীতি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. নাসিম আখতার হোসাইন।
আলোচনাকালে সম্প্রতি সারা দেশে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক হামলার প্রসঙ্গে অধ্যাপক ড. নাসিম আখতার বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা এ উপমহাদেশের হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার ইতিহাস টেনে পুরো বিষিয়টিকে স্বাভাবিকীকরণের চেষ্টা করি। কিন্তু এটি আমরা এড়িয়ে যাই যে হিন্দু-মুসলমানের ঐক্যের ভিত্তিতেই এ ভূখন্ডে সন্ন্যাসী বা ফরায়েজী আন্দোলনের মত বড় আন্দোলন হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতিটি সৃষ্টিই বৈচিত্র্যে অন্যের চেয়ে আলাদা। তেমনই নানা মত, পথ, ধর্ম ও পরিচয় নিয়েই একটি মানব সমাজ গঠিত। আমাদের উচিৎ সমাজের সেই বৈচিত্র্যকে উপড়ে না ফেলে গ্রহণ করে নেওয়া।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই অধ্যাপক তার বক্তব্যে আরও বলেন, হামলাকারীরা পরিচয় শুধু হামলাকারীই। তার অন্য কোন পরিচয় নেই। নির্দিষ্ট একটি মতাদর্শ ব্যতীত শোষণ করা যায় না। সে কারণেই শোষক শ্রেণি ধর্মকে সামনে রেখে শোষণ করে থাকে।
পারস্পারিক সম্প্রীতি বার্তা দিয়ে অধ্যাপক নাসিম বলেন, প্রকৃতপক্ষে মানুষে মানুষে সম্প্রীতির বন্ধন রচনা করা না গেলে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমাদের সকল প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হবে। এজন্য সাম্য, সামাজিক মর্যাদা এবং মানবিক শিক্ষার মাধ্যমে একটি আদর্শ রাষ্ট্র বিনির্মাণে প্রত্যেক নাগরিককে সমানভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নাসরীন সুলতানা। সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, ধর্ম আমাদের মনে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও শ্রদ্ধাবোধের জন্ম দেয়। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দেখেছি এই ধর্মকে ব্যবহার করে এক শ্রেণি নিজেদের স্বার্থ আদায়ের লক্ষ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাকে উস্কে দিচ্ছে। এতে আমাদের সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে, যা কখনও কাম্য নয়। সামাজিক মানুষ হিসেবে সমাজে সম্প্রীতি রক্ষা করা আমাদেরই দায়িত্ব।
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. ইখতিয়ার উদ্দিন ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক শামসুল আলম ও বশির আহমেদ এবং সহযোগী অধ্যাপক শাকিল আহমেদ ও মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান।