২৫ অক্টোবর ২০২১, ২১:০৮

ঢাবি হলের খাবারের মান নিয়ে পোস্ট করায় কর্মীকে মারধর ছাত্রলীগ নেতার

অভিযুক্ত মুনেম শাহরিয়ার মুন  © টিডিসি ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ডাইনিংয়ের খাবারের মান নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করার জেরে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে একই হল শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে।

সোমবার (২৫ অক্টোবর) ঢাবি স্যার এ এফ রহমান হলের ডাইনিংয়ে এই ঘটনা ঘটান একই হল শাখা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী মুনেম শাহরিয়ার মুন। অভিযুক্ত মুন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী।

ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী গোলাম রাব্বি হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের অনুসারী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হলের খাবার বেশ কিছুদিন ধরে খারাপ হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী গোলাম রাব্বি হলের ফেসবুক গ্রুপে পোষ্ট দেয়। এই পোস্টের কারণে মেসের ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িতরা তার ওপর ক্ষেপে যায়।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, গোলাম রাব্বি আজ দুপুরে হলের ডাইনিং 'মেস রেনেসা' থেকে নিজের কক্ষে খাবার নিতে চাইলে রুমে খাবার নেওয়া যাবেনা বলে বাঁধা প্রদান করেন মেস ম্যানেজার সৌরভ হাসান সুজাত ও রাকিবুল হাসান রাকিব। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় এবং একে অপরকে গালিগালাজ করেন। এসময় মেস ম্যানেজাররা রাব্বিকে মেসর খাবার খেতে নিষেধ করেন।

এরপর রাব্বি সেখান থেকে বেরিয়ে মেসের পাশের দোকানে গেলে হঠাৎ হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হেসেনের অনুসারী মুনেম শাহরিয়ার মুন সহ আরো আট দশজন এসে তাকে মারধর করে। এসময় তাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভুক্তভোগী গোলাম রাব্বি বলেন, আমার টিউশন থাকায় খাবার রুমে নিয়ে যেতে চাইছিলাম। কিন্তু মেসের ম্যানেজার নিতে দেননি। আমি খাবারের মান নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলাম। এটা নিয়ে তারা অনেক রাগান্বিত। আজকে খাবার নিতে গেলে ওনারা বলছেন, মেসের টাকা নিয়ে চলে যেতে। এক পর্যায়ে আমি হলের দোকানে বসেছিলাম। মুন ভাই এসে আমাকে থাপ্পড় মারেন। আমি কীভাবে হলে থাকি-সেটাও তিনি দেখে নেবেন বলে হুমকি দেন।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে মেস ম্যানেজার সৌরভ হাসান সুজাত বলেন, নিয়ম না থাকায় আমি রুমে খাবার নিতে দিইনি। এক পর্যায়ে রাব্বি তার কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে আমাদের উপর চড়াও হয়েছিলো। আমি নিরাপত্তা চেয়ে হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর একটি আবেদনও দিয়েছি। তিনি বিষয়টি দেখবেন।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মুনেম শাহরিয়ার মুন দায় স্বীকার করে বলেন, আমি তাকে ছোট ভাই হিসেবে থাপ্পর মেরেছি। পরে রুমে ডেকে আমি তাকে সরি (দুঃখিত) বলেছি। পুরো ঘটনার জন্য আমি দুঃখিত, তখন আমি মেজাজ ঠিক রাখতে পারি নাই।

বিষয়টি নিয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান বলেন, শুনেছি তারা নিজেরা বিষয়টি সমাধান করে নিয়েছে। একটি অভিযোগ পেয়েছি, সেখানে একজনের দুর্ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। আর নিরাপত্তাহীনতার কথা বলা হয়েছে। মেসের দায়িত্বরত শিক্ষককে আমি বলে দিয়েছি, তিনি বিষয়টি সমাধান করবেন।