সাম্প্রদায়িকতার সকল বীজ উপড়ে ফেলতে হবে: রাবি উপাচার্য

সাম্প্রদায়িকতার সকল বীজ উপড়ে ফেলতে হবে
সাম্প্রদায়িকতার সকল বীজ উপড়ে ফেলতে হবে  © টিডিসি ফটো

‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় সাম্প্রদায়িকতার ঠাঁই নেই’- শ্লোগানকে ধারণ করে সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

সোমবার (২৫ অক্টোবর) বেলা ১১টায় প্যারিস রোডে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক তারেক নূরের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, উপ-উপাচার্যদ্বয় অধ্যাপক সুলতান-উল ইসলাম ও চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিক, সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা প্রমূখ।

মানবন্ধনে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিক বলেন, দেশ যখন উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন দেশের এক কুচক্রী মহল পরিকল্পিত ভাবে দেশের সাম্প্রদায়িক দাংগার সৃষ্টি করছে। কিন্তু স্বাধীনতার এই সুবর্ণ জয়ন্তীতে এমন অরাজকতা সত্যিই নেক্কার জনক।

তিনি বলেন, অসাম্প্রদায়িক দেশে এমন অরাজকতা রুখতে প্রয়োজন বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে সরকারের কার্যকরী হস্তক্ষেপ। সেইসাথে দেশের আইসিটি এক্টের কার্যকরী প্রয়োগ করা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যাতে কোন গুজব ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেজন্য দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ধর্মের রাজনীতি ও ধর্মাশ্রয়ের রাজনীতির মধ্যে ব্যাপক ফারাক রয়েছে। কেননা, রাষ্ট্র ধর্ম, সমাজ ধর্ম ও মানবিকতা ধর্ম আজ ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতিতে বিপন্ন হয়েছে। অথচ ১৯৭১ সালের বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অস্প্রদায়িক দেশ গঠন করার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করা হয়েছিল। কিন্তু আজ দেশ যেন ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতিতে পরিণত হয়েছে। যা আড়াই শতবছর আগের উদ্ভাবিত সম্প্রীতির ঐক্য বিনাশী দ্বিজাতিতত্ত্বের বিষবাষ্প লেলিহান শিখায় পরিণত হয়েছে। ফলে আজ পুড়ছে ঘরবাড়ি, পুড়ছে মানুষ, পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাচ্ছে আত্ম মানবিক সম্পর্ক। এ যেন সাম্প্রদায়িকতার এক নতুন বিষবাষ্প।

তিনি আরও বলেন, আমরা তো আবহমান বাংলায় সহশ্র বছর ধরে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ। যেখানে আমরা বড় হয়েছে অসাম্প্রদায়িত চেতনায়। কিন্তু কেন এমন হচ্ছে, তা চিন্তা করার বিষয়। ১৯৭৫ সাল পরবর্তী কুচক্রী মহলের দ্বারা শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ধর্মের নামে যে কুসংস্কার ছড়ানো হয়েছিল, তারই পরিণত ফল আজকের এই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। যদিও বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গঠিত, তবে কিছু নগণ্য মানুষ এই সম্প্রীতি নষ্ট করছে।

তাই বঙ্গবন্ধুর বাংলায় সাম্প্রদায়িকতার ঠাঁই নেই, একথা বাস্তবায়ন করতে হলে সাম্প্রদায়িকতার সকল বীজ উপড়ে ফেলতে হবে এবং সম্প্রীতি রক্ষার্থে দেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় তথা যেখানে জাতির বিবেক তৈরী হয়, তাদেরকে সোচ্চার থাকার আহ্বান জানান উপাচার্য।

এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম, প্রক্টর অধ্যাপক লিয়াকত আলী, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক ড. আজিজুর রহমানসহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন সমিতির সদস্য ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।


সর্বশেষ সংবাদ