২৩ অক্টোবর ২০২১, ০৮:৪২

প্রথম ডোজ ১৩ লাখ, দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ২ লাখ শিক্ষার্থী

প্রথম ডোজ ১৩ লাখ, দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ২ লাখ শিক্ষার্থী  © সংগৃহীত

সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় অংশের শিক্ষার্থী করোনা টিকার আওতায় এলেও অধিভুক্ত তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ কার্যক্রমে পিছিয়ে পড়ছেন। সব শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনতে ডিসেম্বর পর্যন্ত লেগে যাবে বলে মনে করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে সব শিক্ষার্থী টিকার আওতায় না এলেও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খুলে দেওয়া হয়েছে, নেওয়া হচ্ছে সশরীরে ক্লাস ও পরীক্ষা।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সূত্র জানায়, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩৯ লাখ। এরই মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ লাখ ও ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক লাখ। এর বাইরে ৩৯টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী প্রায় তিন লাখ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ইউজিসিতে পাঠানো তথ্যে বলা হয়, গত সোমবার পর্যন্ত ২৫ লাখ ৫৫ হাজার শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেছেন। এর মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১৩ লাখ ৫০০ জন শিক্ষার্থী। আর দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন দুই লাখ ১০ হাজার শিক্ষার্থী। তবে ৩৯টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই প্রথম ডোজ নিয়েছেন। সেই সংখ্যা ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশের মধ্যে হবে বলে ইউজিসি জানিয়েছে।

ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেন, চলতি মাসের মধ্যে প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ই খুলে যাবে। তবে দু-চারটি বাদ থাকতে পারে। কারণ দেখা যাচ্ছে, তাদের পরীক্ষা চলছে। সেটা শেষ করে তারা খুলতে চায়। তবে এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার ব্যাপারে সবাই একমত।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ৩৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী প্রথম ডোজ নিয়েছেন। এ ছাড়া এখন জন্ম নিবন্ধনের নম্বর দিয়েও শিক্ষার্থীরা সুরক্ষা অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করতে পারছেন। আমরা দ্রুততার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রথম ডোজ শেষ করার চেষ্টা করছি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, টিকায় পিছিয়ে আছে অধিভুক্ত তিন বিশ্ববিদ্যালয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২২ লাখেরই জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। আর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের কত শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্র আছে বা কতজন টিকা নিয়েছেন, সে তথ্য ইউজিসির হাতে নেই।

এদিকে, টিকা না দিয়েই খুলে দেওয়া হচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। গত বৃহস্পতিবার থেকে দুই হাজার ৬০০ অধিভুক্ত কলেজে অনলাইনের পাশাপাশি সশরীরেও পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮ লাখ শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্র আছে। যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে তাদের সুরক্ষা অ্যাপে গিয়ে নিবন্ধন করা ও টিকা নেওয়ার জন্য জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই তাদের জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে সুরক্ষা অ্যাপে গিয়ে নিবন্ধনের জন্য বলা হয়েছে।

এর আগে, প্রথম ডোজ টিকা নেওয়ার শর্তে গত ৫ অক্টোবর অনার্স চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো। এরপর ১০ অক্টোবর হল খুলেছে সব বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য। আর গত ১৭ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে সশরীরে ক্লাস। বিশ্ববিদ্যালয়টির ৯৬ শতাংশ শিক্ষার্থী করোনার টিকার আওতায় এসেছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

অন্যদিকে ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বর্তমানে ৯৯টির শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ লাখ ৭৪ হাজার। ৭০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যমতে, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের এক লাখ ২৯ হাজার ৬৯৯ জন শিক্ষার্থী জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেছেন। জাতীয় পরিচয়পত্র নেই এমন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩২ হাজার ৮৩৮ জন ইউজিসির ওয়েব লিংক ‘ইউনিভ্যাক’-এ রেজিস্ট্রেশন করেছেন।

আগামী ১৩ নভেম্বর থেকে সরাসরি ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একাডেমিক কাউন্সিল। এরই মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ, রাজশাহী, চট্টগ্রামসহ বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ই সশরীরে ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু করেছে। তবে এখনো যে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে পারেনি, এ সপ্তাহেই তাদের একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট সভা রয়েছে। সেখানেই বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।