জাবির ডাইনিং-ক্যান্টিন কতটা প্রস্তুত?
করোনা মহামারীতে দীর্ঘ বন্ধের পর আগামী ১১ অক্টোবর থেকে খুলছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবসিক হলগুলো। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে খাবারের মান ও পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন থাকা হলের ডাইনিং-ক্যান্টিনগুলো কতটা প্রস্তুত হয়েছে শিক্ষার্থীদের জন্য?
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হলে ওঠার প্রথম ১৪ দিন শিক্ষার্থীদের হলে থেকেই অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে হবে। অন্যদিকে কোভিড নিরাপত্তার স্বার্থে এখনই বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় অবস্থিত খাবারের দোকান খোলা হবে না। তাই শিক্ষার্থীদের জন্য হলের ডাইনিং ও ক্যান্টিনকে প্রস্তুত করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ডাইনিং-ক্যান্টিনের খাবারের মান বাড়ানোসহ অন্যান্য ‘সমস্যা’ কাটানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহা. মুজিবুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হলে আসবেন। তাদের নিরাপত্তা ও সুস্থতার কথা চিন্তা করে দুই সপ্তাহের জন্য হলে অবস্থান করার কথা বলেছি। এই সময়ের মধ্যে তারা হলে থেকেই ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। তাদের খাবারের জন্য যাতে বাইরে যেতে না হয় সেজন্য হলের ডাইনিং ও ক্যান্টিন সেভাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে।
যেসব হলে ডাইনিং নেই, সেসব হলে ক্যান্টিনগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর কথা জানান এই প্রাধ্যক্ষ। তিনি বলেন, যেসব হলের ডাইনিং নেই, কিছুদিন পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনে ডাইনিং চালু করার ব্যাপারেও আমরা ভাববো।
হলের বাইরে ক্যাফেটেরিয়াতেও খাবারের ব্যবস্থা করা হবে জানিয়ে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা জরুরি প্রয়োজনে হলের বাইরে গেলে ক্যাফেটেরিয়ায় খেতে পারবে।
তবে হলের খাবারের মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের মানে যে সংশয় রয়েছে সে বিষয়ে তিনি বলেন, হলের খাবারের মান উন্নয়নের জন্য আমরা সর্বোচ্চ সচেষ্ট আছি।
হলের ডাইনিং প্রস্তুত আছে জানিয়ে আল-বেরুনী হলের প্রাধ্যক্ষ আশরাফুল আলম বলেন, আমাদের হলের ডাইনিং প্রস্তুত আছে। কিন্তু ক্যান্টিন নিয়ে তো আমরা কিছু করতে পারি না। এটা নির্ভর করে ক্যান্টিন মালিকের উপর। ক্যান্টিন নিয়ে টেন্ডার আহ্বান করলেও সেরকম কাউকে আমরা পাইনি।
শহীদ সালাম-বরকত হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আলী আজম তালুকদার বলেন, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ১৪ দিন হলে অবস্থানের কথা বলা হয়েছে। এ সময় শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে হলের ডাইনিং ও ক্যান্টিনে খাবার খাবে। এতে সংকুলান না হলে ছাত্রদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হবে।
খাবারের মান নিয়ে এ প্রাধ্যক্ষ বলেন, এই হলের খাবারের মান বরাবরের মতই ভালো। পত্র-পত্রিকায় অনেক সংবাদ হয়েছে। সদিচ্ছা থাকলে যে বাজেট আছে তা দিয়েই অনেক ভালো খাবারের ব্যবস্থা করা সম্ভব।
এখনও টিকা নেয়নি অনেক ডাইনিং কর্মচারী
হল প্রাধ্যক্ষদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশিরভাগ হলের ডাইনিং কর্মচারীরা এখনও টিকা নেয়নি। তবে দ্রুত তাদের টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান প্রাধ্যক্ষরা। তবে ক্যান্টিন যারা চালাবেন তাদের টিকা নেয়ার বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানতে পারেনি তারা।
শহীদ রফিক-জব্বার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সোহেল আহমদ বলেন, আমাদের হলের কিছু কর্মচারী টিকা নিয়েছেন। আমি নিজে কয়েকজনকে টিকার নিবন্ধন করে দিয়েছি। তারপরেও আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
সালাম-বরকত হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আলী আজম তালুকদার বলেন, আমার হলের ডাইনিংয়ের ৫-৬ জন কর্মচারী টিকা নিয়েছেন। অন্যরাও নিয়ে ফেলবে। আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাই কাজ করবেন।