তালা ভেঙে হলে প্রবেশকারীদের শোকজ দেবে ঢাবি প্রশাসন
করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আগামী ৫ অক্টোবর হল খোলার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে এরই মধ্যে হলে ওঠা শুরু করে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এই পরিস্থিতিতে নিয়মভঙ্গ করে হলে উঠা শিক্ষার্থীদের কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষকে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িতরা যদি দোষী সব্যস্ত হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন।
আজ শনিবার (২ অক্টোবর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির জরুরি বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি হলের প্রভোস্ট দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গতকাল শুক্রবার (১ অক্টোবর) যে দুটি হলে শিক্ষার্থীরা তালা ভেঙ্গে ও জের করে হলে প্রবেশ করেছে তাদেরকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট হল থেকে তদন্ত কমিটি করে এই ঘটনায় কারও অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন।
এদিকে, রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে ঢাবি প্রশাসন জানায়, কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি আবাসিক হলের তালা ভেঙ্গে হলে প্রবেশ করেছে এবং হলের বৈদ্যুতিক লাইন ও পানির সংযোগ নিজ দায়িত্বে চালু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন লঙ্ঘন করেছে তাদেরকে তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষকে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে আজ রাতে অনুষ্ঠিত প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির এক জরুরি সভায় এই নির্দেশ দেয়া হয়।
সভায় প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট, বিভিন্ন হোস্টেলের ওয়ার্ডেন এবং প্রক্টর উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, হল কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত যারা হলে প্রবেশ এবং অবস্থান করছে, তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের জন্য কেন শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, এই মর্মে আগামী ৭ অক্টোবরের মধ্যে জবাব চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শুধু অনার্স ৪র্থ বর্ষ এবং মাস্টার্সের যে সকল আবাসিক শিক্ষার্থী অন্ততঃ ‘কোভিড-১৯’-এর প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছে, তারা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে টিকা গ্রহণের কার্ড/সনদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ পরিচয়পত্র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দেখিয়ে আগামী ৫ অক্টোবর সকাল ৮টা থেকে থেকে নিজ নিজ হলে উঠতে পারবে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা সাপেক্ষে একই শর্তে যত দ্রুত সম্ভব অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ আবাসিক হলে উঠানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
প্রসঙ্গত, গতকাল দুপুর ও সন্ধ্যায় তালা ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হল ও ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলে জোর করে প্রবেশ করেছে একদল শিক্ষার্থী। তাদের মতে, চলতি মাসের এই পাঁচ দিন বাসায় থাকলে তার জন্য পুরো মাসের ভাড়া গুনতে হবে তাদের। তাই ১ তারিখেই হলে উঠেছে তারা।