চির নিদ্রায় শায়িত অপু
পৈত্রিক নিবাস পিরোজপুরের স্বরূপকাঠির নাওমারা গ্রামে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক শিক্ষার্থী মাসুদ আল মাহাদী অপু। মঙ্গলবার রাত ১০টায় নিজগ্রামে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়, পরে সাড়ে ১০টায় সম্পন্ন হয় দাফন।
এর আগে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দুপুর ১২টার দিকে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ড. সৈয়দ মুহাম্মদ এমদাদ উদ্দিন। অপুর সহপাঠী, বন্ধু-বান্ধব, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও আত্মীয়-স্বজন জানাজায় অংশ নেন।
গত সোমবার দুপুরে রাজধানীর চানখাঁরপুলের নাজিম উদ্দীন রোডের স্বপ্ন বিল্ডিংয়ের আট তলার একটি কক্ষ থেকে ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় অপুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে মঙ্গলবার মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে জানা যায় যে অপু আত্মহত্যা করেছেন। অপুর আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. প্রদীপ বিশ্বাস। তিনি বলেন, আরও তদন্তের জন্য অপুর কণ্ঠনালীর টিস্যু সংগ্রহ করা হয়েছে।
তার সহপাঠীরা জানান, প্রাণবন্ত, প্রতিবাদী ও মেধাবী অপু প্রথমবর্ষেও একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলো। সাত কলেজ অধিভুক্তির প্রতিবাদে আন্দোলন, শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে আন্দোলন কিংবা ডাকসুর দাবিতে আন্দোলন, সবখানেই ছিলো অপুর দৃপ্ত উপস্থিতি। প্রতিবাদে শামিল হতো বলে হামলার শিকারও হয়েছে কয়েকবার।
এইচএসসিতে বরিশাল বিভাগে তার ফলাফল ছিলো শীর্ষে। ২০১১-১২ সেশনে ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তির পর প্রথম বর্ষে ফলাফল খারাপ হলে শিক্ষা জীবনকে এক বছরের জন্য বিরতি দিতে হয় তাকে। এ সময় সে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
ভালো ফল নিয়েই অনার্স-মার্স্টাস পাশ করেন তিনি। স্বপ্ন ছিলো চলচ্চিত্র নির্মাতা হবার। নানা কারণে সেই স্বপ্নে ছেদ পড়ে। উঠে পড়ে লাগেন চাকরির জন্য।
বিসিএসসহ আটটি চাকুরির পরীক্ষার সাতটিতেই প্রাথমিকভাবে উত্তীর্ণ ছিলেন। সব মিলে অপুর আত্মহত্যার কোন যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন না বন্ধু ও স্বজনরা।