আবাসিক হল বন্ধ, বিপাকে রাবি ভর্তিচ্ছুরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা  © ফাইল ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হবে। ৬ অক্টোবর ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই ভর্তি পরীক্ষা। এদিকে ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে শহরজুড়ে চরম আবাসনসংকট দেখা দিয়েছে।

পরীক্ষা উপলক্ষে জেলার বাইরে থেকে রাজশাহী শহরে এসে আশ্রয় নেবেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী। আর তাঁদের থাকার জায়গা নিয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন অভিভাবকরা। বিশেষ করে রাজশাহী নগরীর আবাসিক হোটেলগুলোতে মিলছে না কোনো কক্ষ। তবে কোনো কোনো মেসে অগ্রিম গলাকাটা ভাড়া নিয়ে অস্থায়ী সিট ভাড়া দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষা হবে আগামী ৪ থেকে ৬ অক্টোবর। আগামী ৪ অক্টোবর রাবিতে ‘সি’ ইউনিটের (বিজ্ঞান) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরদিন ৫ অক্টোবর ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষাও তিনটি শিফটে অনুষ্ঠিত হবে। ৬ অক্টোবর হবে ‘বি’ ইউনিটের (বাণিজ্য) পরীক্ষা। সবমিলিয়ে আসবে প্রায় এক লাখ ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী।

আগের বছরগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল, রিডিং রুম, পেপার রুম, মসজিদসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা অবস্থান করলেও এবার কোথাও তাদের থাকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে। ফলে এবার ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে বাইরে থেকে আসা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা চরম আবাসন সমস্যায় পড়বেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শঙ্কিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বাধ্য হয়ে হোটেল বা মেসের সিট পেতে হন্যে হয়ে ঘুরছেন। নগরীর সব আবাসিক হোটেলে অগ্রিম কক্ষ বুকিং দিতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা। তবে গত ১৫ দিন আগ থেকেই হোটেলগুলোর কক্ষ বুক হয়ে যায়। ফলে এখন হোটেল কক্ষও যেন সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে।

রাজশাহী মহানগর আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার হাসান কবির জানান, রাজশাহী শহরে ছোট-বড় মিলিয়ে আবাসিক হোটেলের সংখ্যা ৬০ থেকে ৬৫টি। এতে এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার মানুষকে রাখা সম্ভব। কিন্তু প্রতিবছরই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সময় হোটেলের কক্ষের জন্য চেষ্টা করেন অন্তত ২০ হাজার শিক্ষার্থী। ফলে প্রতিটি হোটেলেই কক্ষের জন্য হাহাকার দেখা দেয়।

নগরীর রেলগেট এলাকার হোটেল গুলশানের ব্যবস্থাপক ফরিদ আহমেদ বলেন, প্রতিদিন ৫০-৬০ জনকে ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে। রাবির পরীক্ষার সময় প্রতিবছরই এমন হয়।’ নগরীর সাহেববাজার এলাকায় অবস্থিত হোটেল নাইস ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপক হীরাঙ্গীর মোল্লা বলেন, ‘আমাদের রুমগুলো সব এসি। তাই চাহিদাও বেশি। দুই সপ্তাহ আগেই বুকিং শেষ হয়েছে।

রাজশাহীতে ছোট-বড় মিলিয়ে মেস আছে প্রায় পাঁচ হাজার। সেখানে এক লাখের বেশি শিক্ষার্থী থাকে। রাজশাহী মহানগর মেস মালিক সভাপতি এনায়েতুর রহমান বলেন, রাবির পরীক্ষা নিয়ে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, সেটি নিয়ে আমরাও ভাবছি।

যদিও ভর্তিচ্ছুদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে থাকার ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছে রাবি প্রশাসন।  বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক এম তারেক নুর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি জিমনেসিয়াম আছে সেখানে মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়ামে ছেলে শিক্ষার্থীদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশন ও পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শহরের হোটেলগুলো যেনো শিক্ষার্থীদের কাছে কম মূ্ল্যে সিট ভাড়া দেয় সে বিষয়ে আলোচনা করা হবে। এছাড়া শহরের টেনিস কমপ্লেক্সসহ কিছু পাবলিক প্রোপার্টিতে শিক্ষার্থীদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করা যায় কি না সে বিষয়টিও চিন্তা করা হচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ