গুগলে ঢাবির একই ব্যাচের ৫ শিক্ষার্থী, আমাজনে এক
বিশ্বের সর্ববৃহৎ সার্চ ইঞ্জিন ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগলে সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থী। এছাড়া একই ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী যোগ দিয়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আমাজনে।
তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়টির সিএসই বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী। গুগলে যোগ দেওয়া ওই পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন- নাহিয়ান আশরাফ রাঈদা, শাহরিয়ার সজীব, সাদমান সাকিব, সাফায়েত উল্যাহ ও আল নাসিরুল্লাহ সিদ্দিকী ।
পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে শাহরিয়ার হোসেন সজীব, নাহিয়ান আশরাফ রাঈদা ইতোমধ্যেই তাইওয়ান অফিসে কাজে যোগ দিয়েছেন। সাদমান সাকিব ও সাফায়েত উল্যাহ যোগ দেবেন ২০২২ সালের শুরুতেই। আর আল নাসিরুল্লাহ সিদ্দিকী শিগগির গুগল পোল্যান্ডে যোগদান করবেন। এছাড়াও একই ব্যাচের শাহাদাত হোসেন শাহিন সম্প্রতি আমাজন জার্মানিতে যোগদান করেছেন।
বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাঈদা কাজ করছেন গুগলের ‘পিক্সেল ক্যামেরা সিস্টেম’ সফটওয়্যার টিমে। সাদমান সাকিব সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার পদে ‘ক্রোম ওএস’ টিমে যোগ দেবেন। অন্যদিকে সাফায়েত উল্যাহ কাজ করবেন ‘গুগল পিক্সেল টিমে’। আর সদ্য চাকরির সুযোগ পাওয়া আল নাসিরুল্লাহ সিদ্দিকী গুগল পোল্যান্ডে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করবেন।
গুগলে চাকরির অফার পাওয়ার বিষয়ে আল নাসিরুল্লাহ সিদ্দিকী বলেন, আমার জন্য এই পুরা জার্নি মোটেও সহজ ছিল না। অনেক কঠিন সময় পার করে আজকের এই সফলতা এসেছে। আমি প্রোগ্রামিং কন্টেস্ট করতাম ভার্সিটি লাইফের একদম শুরু থেকেই। তবে পারফরমেন্স ছিল হতাশাজনক। প্রোগ্রামিং লাইফের হয়ত একমাত্র সারটিফাইড এচিভমেন্ট ২০১৮ এর আইসিপিসি ঢাকা সাইটে ১০ম হওয়া , কিন্তু কন্টেস্ট করে নিজের থিংকিং ক্যাপাবিলিটি, প্রব্লেম সল্ভিং স্কিলের অনেক ইম্প্রুভ হয়েছে। কন্টেস্ট না করলে গুগলে হয়ত এপ্লাই করার ই সাহস পেতাম না।
নাহিয়ান আশরাফ রাঈদা বলেন, আমরা দুজন ব্যাচমেট ইতিমধ্যেই তাইওয়ান অফিসে আছি, আর এই বছর আরও দুজন আমাদের সঙ্গে যুক্ত হবে। এটা ভেবেই অনেক আনন্দ হচ্ছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের চার বন্ধু একসঙ্গে এক প্রতিষ্ঠানে কাজ করব৷ অপেক্ষায় আছি কবে বাকি দুইজন এখানে এসে পৌঁছাবে।
সাফায়েত উল্যাহ বলেন, ঢাবি থেকেই আমরা পাঁচজন একই প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ পেয়েছি। চেষ্টা করবো দেশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম কিভাবে আরো বাড়ানো যায় সে বিষয়ে।
সাদমান সাকিব বলেন, প্রবলেম সলভিং এবং কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিংয়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো ফলাফল আমাকে গুগলে আবেদন করার ব্যাপারে বড় ভূমিকা পালন করেছে। গুগলে সিভি পাঠাই, সেখানে আমার সিভিটি বাছাই তালিকায় শর্টলিস্টে স্থান পায়। প্রায় ৪ মাসের লম্বা প্রক্রিয়ার পর অবশেষে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে আমার সিভিটি চূড়ান্ত করা হয়।
সাদমান সাকিব, শাহরিয়ার সজীব ও আমাজনে যোগ দেওয়া শাহাদাত হোসেন শাহিন উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেছেন নটর ডেম কলেজ থেকে। সাফায়েত উল্যাহ উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন ফেনী সরকারি কলেজ থেকে। নাহিয়ান আশরাফ রাঈদা হলি ক্রস স্কুল ও কলেজে থেকে। এছাড়া আল নাসিরুল্লাহ সিদ্দিকী উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন রংপুর সরকারি কলেজ থেকে।
বিশ্বাবিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের (সিএসই) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন মো. তারেক বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা নিয়মিতই বড় বড় প্রতিষ্ঠানে কাজ করে দেশের ও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উজ্জ্বল করছে। সামনের দিনগুলোতে আমাদের শিক্ষার্থীরা আরও ভালো করবে এই কামনা করি।