জাবি শিক্ষার্থীকে মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন, ৪ আনসার সদস্য বহিষ্কার
সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় ৪ আনসার সদস্যকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করেছে স্মৃতিসৌধ কর্তৃপক্ষ। তারা হলেন- ওমর ফারুক, সারোয়ার, রমজান ও নজরুল।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) তাদের বরখাস্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ের কমান্ড্যান্ট আফজাল হোসেন।
তিনি বলেন, এই ৪ জন আনসার সদস্যকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা যাতে আনসার সদস্য হিসেবে অন্য কোথাও কাজ না করতে পারেন, সেজন্য তাদের কালো তালিকায় রাখা হয়েছে। এছাড়া আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসা ব্যয়ও আমরা বহন করবো।
এর আগে আনসার সদস্যদের বিচার চেয়ে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধনের পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা চারটি দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হচ্ছে- আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যয় বহন করা, দোষীদের স্থায়ী বহিষ্কার করা, গ্রেফতার করা, স্মৃতিসৌধে চলমান অনৈতিক কাজ বন্ধ করা।
পরে আশুলিয়া পুলিশ ও জাবি প্রক্টর এসে দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে আধাঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। এর কিছুক্ষণ পরই আনসার সদস্যদের বহিস্কারের খবর আসে।
এসময় আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম কামরুজ্জামান বলেন, অবরোধের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। শিক্ষার্থীদের চারদফা দাবি শুনেছি। দোষী আনসারদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে আনসারদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে জেনেছি। আর আহত শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
জানা যায়, সোমবার বিকেলে জাবির প্রাণীবিদ্যা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নূর হোসেনকে (২২) মারধর করেন জাতীয় স্মৃতিসৌধে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা।
শিক্ষার্থী নূর হোসেন জানান, স্মৃতিসৌধে দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা অর্থের বিনিময়ে লোকজনকে ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছিলো। যার প্রতিবাদ করায় আনসার সদস্যরা তাকে রুমে নিয়ে বন্দি করে রাখেন। পরে ৭-৮ জন আনসার সদস্য তাকে মারধর করেন।
শিক্ষার্থী মারধরের প্রতিবাদে করা মানববন্ধনে মার্কেটিং বিভাগের ৪৬ ব্যাচের ছাত্র ইমরান শাহারিয়ার বলেন, সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের হেনস্থা ও মারধরের শিকার হতে হচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য নিজেদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অবিলম্বে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনতে হবে এবং তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আনসার সদস্যরা একজন শিক্ষার্থীকে মারধর করে গুরুতর আহত করার পরেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাসায় বসে তামাশা দেখেছে। তারা একবারের জন্যও আহত শিক্ষার্থীকে দেখতে যায়নি। তাদের উচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিরুদ্ধে না গিয়ে ছাত্রবান্ধব হওয়া।
প্রাণীবিদ্যা বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী এম জিল্লুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দেওয়ার পরেও নূর হোসেনকে অন্যায়ভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।