ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
গণরুমে বসানো হচ্ছে খাট, বরাদ্দ সিট দেখা যাবে অনলাইনে
- ইমদাদুল আজাদ, ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:২১ PM , আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৩২ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) আবাসিক হলের ছাত্ররা হলে আসার আগেই অনলাইনের মাধ্যমে তাদের বরাদ্দকৃত সিট সম্পর্কে জানতে পারবেন বলে জানিয়েছেন স্যার এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান।
সোমবার (৬ সেপ্টম্বর) রাতে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সাথে আলাপকালে তিনি এ কথা করেন। তিনি বলেন, আশা করছি ছাত্ররা হলে আসার আগে তারা অনলাইনে জানতে পারবে যে, কে কোন রুমে অ্যালোকেশন আছে। আমরা সেই অনুযায়ী ইনশাআল্লাহ তুলে দেওয়ার চেষ্টা করবো।
গণরুমের শিক্ষার্থীদের খসড়া সিট বরাদ্দ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সমস্যার কারণে সৃষ্ট দীর্ঘদিনের ‘গণরুম’ ব্যবস্থা না থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গণরুমগুলোতে সিংহভাগে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা অবস্থান করতো। হল খুলে দেওয়া হলে গণরুমের শিক্ষার্থীরা হলে ফিরতে পারবে কিনা ব্যাপারটি অনেকটাই অনিশ্চিত ছিল।
এ বিষয়ে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ও বিজয় একাত্তর হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাচ্ছে গণরুমের শিক্ষার্থীদের মূল রুমগুলোতে সিট বরাদ্দ দিয়ে গণরুমের যে কনসেপ্ট সেখান থেকে সরে আসা। গণরুম বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে না। প্রত্যেক হল তার গণরুমের শিক্ষার্থীদের তালিকা করে, হলের যে খালি সিটগুলো আছে সেখানে তাদেরকে খসড়া বরাদ্দ দেয়ার প্রস্তাব রেখেছে।
পড়ুন: ঢাবিতে গণরুম থাকছে না
তিনি বলেন, যখন হল খোলা হবে এবং গণরুমের শিক্ষার্থীরা যখন হলে ফিরবে তখন সেই সিট বরাদ্দের তালিকাটা প্রকাশ করা হবে। এরপরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের রীতি অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালার মধ্যে সিটের জন্য যে পেমেন্ট আছে সেটা ব্যাংকে জমা দেবে, এরপরে তাদের গণরুম থেকে মূলরুমে বা বরাদ্দকৃত রুমে তুলে দেয়া হবে। এটাতে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠন, হলের যে ছাত্রসংগঠন আছে তারা সহযোগিতা করছে।
গণরুমগুলোতে বসানো হচ্ছে খাট
স্যার এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান বলেন, কোন হলে কয়টা গণরুম আছে, সেগুলোতে কত ছাত্র ছিল, কোনো অবৈধ ছাত্র ছিল কিনা এটার উপরে ডাটা তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের এফ রহমান হলে যেমন ৭টা গণরুম ছিল, আমি ২৮টা খাট তৈরি করে রুমগুলোতে বসানোর ব্যবস্থা করেছি। রুমগুলো পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে।
অধ্যাপক সাইফুল বলেন, একটা গণরুমে ১৪-১৫-১৭ জন করে ছাত্র ছিল। ৮ জনকে আমরা এখান থেকে অ্যালোকেশন দিয়েছি, যারা রুমগুলোতে ছিল। প্রথম বর্ষ থেকেও কিছু নেওয়া হয়েছে। যেসব রুমগুলো অছাত্রদের বেদখলে ছিল সেগুলো বাকী ছাত্রদের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, উপাচার্য মহোদয় আমাদেরকে বলেছেন যে, একটা রুমও যেন হল প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ বা অ্যাকাউন্টিবিলিটির বাইরে না যায়। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা হলগুলোতে কারা অবৈধ ছিল অথবা রাজনৈতিক পরিচয়ে অনেকবছর ধরে থাকে, সেই সিটগুলো আমরা ইতোমধ্যে তালিকা করেছি।
অছাত্ররা উঠতে পারবেনা হলে
প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি অধ্যাপক বাছির জানান, আবাসিক হলগুলো খোলার পর অছাত্রদের কোনোভাবেই হলে উঠতে দেয়া হবেনা। আবাসিক হলে অছাত্রদের কোনো জায়গা নাই। যারা হলের বৈধ শিক্ষার্থী এবং যাদের টিকা নেয়া হয়েছে, কেবল তারাই হলে উঠতে পারবেন। যাদের ছাত্রত্ব শেষ, তাদের হল ছেড়ে দিতে হবে।
সংক্রমিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে থাকবে কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা
অধ্যাপক বাছির বলেন, আমরা করোনা থেকে মুক্ত হয়ে গেছি এমনটা বলা যাবেনা। এটার সাথেই আমাদের বসবাস করতে হবে। অনাকাঙ্খিতভাবে কোনো শিক্ষার্থী কোভিড পজিটিভ হলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের যে মেডিকেল সেন্টার আছে সেখানে দুই তিনটা রুম তাদের জন্য সংরক্ষিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদি আক্রান্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে যায় তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের অতিথি কক্ষগুলোতে মেডিকেল সেন্টারের সমান্তরালে সেগুলোকেও মেডিকেল সেন্টারের কোয়ারেন্টাইনের জন্য ব্যবহার করা হবে।