বন্ধ ক্যাম্পাসে ছাত্রী হলে চুরি, ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল  © টিডিসি ফাইল ফটো

করোনা মহামারিতে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রযেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও সশীরের শিক্ষা কার্যক্রম। গত বছরের মার্চে তড়িঘড়ি করে বাড়িতে ফেরায় হলগুলোতেই রয়েছে শিক্ষার্থীদের জিনিসপত্র। কিন্তু হলগুলোতে একাধিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। যা নিয়ে শিক্ষার্থীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে চুরির ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে ছাত্রীরা। বৃহস্পতিবার হল প্রভোস্ট বরাবর আবেদন করেন ৩৩০নং রুমের চার শিক্ষার্থী। আবেদনকারী শিক্ষার্থীরা হলেন- রসায়ন বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী নাহিদা আক্তার শিলা, ভূতাত্ত্বিক বিভাগের সাকিয়াত খান নিশি, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের রিদওয়ানা বিনতে মাহবুব ও প্রাণীবিদ্যা বিভাগের ছাত্রী সুমাইয়া সুরভী।

আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়, তাদের রুমের দুইটি সিলিং ফ্যান, দামী গহনা, শাড়ি, বিছানার চাদর, জমানো প্রচীন মুদ্রাসহ প্রয়োজনীয় জিনিস হারিয়েছে।
শিক্ষার্থীরা এ জন্য প্রশাসনকে দায়ী করে বলেন, আমাদের অবর্ণনীয় ক্ষতির দায় প্রশাসনকে নিতে হবে। কারণ চুরির ঘটনার সময় মাত্র একজন হল সুপারিন্টেন্ডেন্ট কর্মরত ছিলেন। যেখানে দুজনের থাকার কথা ছিলো। এছাড়া হলের সিসি ক্যামেরা নষ্ট বলে জানতে পেরেছি।

হল সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ মে হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিদিনের মতো হলের প্রতিটি তলা তদারকি করা হয়। এ সময় একটি রুমের তালা খোলা দেখতে পান হলের কর্মচারীরা। পরে তারা বিষয়টি হল প্রশাসনকে অবহিত করেন। সেসময় ২০টিরও বেশি রুমে চুরির ঘটনা রিপোর্ট করা হয়। ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের ভুক্তভোগী ছাত্রী সাকিয়াত খান নিশি বলেন, হলের স্টাডি রুম, কমন কিচেন এবং বিভিন্ন কক্ষ থেকে চুরির ঘটনা ঘটেছে। আসলে চুরি যাওয়া জিনিসপত্রের পরিমাণ আরও বেশি। ক্যাম্পাস দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা সবাই বাড়িতে অবস্থান করছেন। ফলে কোন রুমে চুরি হয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বলা মুশকিল। এতে আমাদের অনেকেই চিন্তিত।

এ নিয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুজিবুর রহমান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, যারা ক্ষতিপূরণের দাবি করেছে এটা মূলত আগের চুরির ঘটনা। তারা দীর্ঘদিন পর এসে এটা খেয়াল করেছে। তিনি এ ঘটনায় হলের সংস্কার কাজের ওপর দায় চাপিয়ে বলেন, হল সম্প্রসারণের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই আমাদের হস্তান্তর করা হবে। মূলত কাজ চলার কারণেই বাইরের শ্রমিকদের সেখানে প্রবেশ করতে হয়। ফলে নিরাপত্তায় একটু ঘাটতি তৈরি হয়েছিলো। পাশে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের কাজের জন্য মাটি ফেলা হয়েছিল যা চোরদের নিরাপত্তা প্রাচীর টপকাতে সুবিধা দিতো । এ জন্য সড়ক বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করে দিয়েছি।

তদন্ত কমিটির প্রধান ও হলের আবাসিক শিক্ষক সোলনারা আকতারকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, আমরা আমাদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। সেখানে কারণ অনুসন্ধান ও সুপারিশ করা হয়েছে। মূলত চুরির ঘটনার সময়ে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো বজ্রপাতে নষ্ট হয়ে পড়েছিলো এবং শ্রমিকদের অবাধ যাতায়াতের কারণে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। এখন হলের মধ্যে প্রত্যেককে নিরীক্ষা করে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়।
তবে বন্ধ ক্যাম্পাসে হলে চুরির ঘটনা নতুন নয়। গত বছরের ১৯শে জুন প্রীতিলতা হলের দুটি ব্লকের ১৭টি কক্ষ ও স্টোর রুমের দরজা খোলা অবস্থায় পাওয়া যায়। সে হলেও সিসি ক্যামেরা নষ্ট থাকায় অপরাধীদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।


সর্বশেষ সংবাদ