০৬ আগস্ট ২০২১, ১৮:০৬

‘জাবি ছাত্রলীগ নেতার গুলিতে’ সহযোগী আহত

শামীম আহমেদ ও তার সহযোগী আবুল  © সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লার গুলিতে আবুল হাসান (৪০) নামে তারই সহযোগী এক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। পরে তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে শুক্রবার (৬ আগস্ট) আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হারুনুর রশীদ বলেন, বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পানধোয়া পূর্বপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক ড. মনসুর আলীর বাসার সামনে এ ঘটনা ঘটে। আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। সেখানে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, জাবি ছাত্রলীগ নেতা শামীমের গুলিতে আবুল হাসান আহত হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় মনসুর আলী বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্তদের একজন গ্রেফতার হলেও সে আইসিইউতে থাকায় এবং বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে না পারায় এখনও মূল ঘটনা জানা যাচ্ছে না। তবে আমাদের তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পাশাপাশি শামীমকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই এলাকার এক বাসিন্দা জানান, গুলিতে আহত আবুল মাদক চোরাকারবার চক্রের সক্রিয় সদস্য। সে আশুলিয়ার গোকুলনগর এলাকার মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে।

এ ব্যাপারে ড. মনসুর আলী বলেন, আমরা কয়েকজন সহকর্মী একটি সোসাইটির মধ্যে বসবাস করি।বেশ কয়েক দিন ধরে এখানে মাদক চোরাকারবারিদের উপস্থিতি লক্ষ্য করছিলাম। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শামীম মোল্লাসহ বাসার সামনে মোটরসাইকেল রেখে আড্ডা দিচ্ছিল। আমি মোটরসাইকেল অন্য জায়গায় রাখতে বললে শামীম মোল্লা আমার সাথে তর্ক শুরু করে এবং তার গুন্ডা বাহিনীকে ডাকে। তারা আমার ওপর চড়াও হয় এবং আমার স্ত্রীকে ধাক্কা মেরে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে। আমি প্রতিবাদ করলে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আমাকে লক্ষ করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এ সময় আবুল হোসেন নামে ওই ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হন।

তিনি এ ঘটনায় আতঙ্ক প্রকাশ করে আরও জানান, এক বছর আগে তার প্রতিবেশী অধ্যাপক হাবিবুল্লাহর ওপর চড়াও হয়েছিলেন শামীম। হাবিবুল্লাহ বর্তমানে পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) ডেপুটেশনে আছেন। এতেই তারা থেমে থাকেনি। গত এক বছর আগে শামীমের নেতৃত্বে চক্রটি তাকেও মারতে চেয়েছিল।

এ ঘটনায় মামলা করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি থানায় গিয়ে কোনো মামলা করিনি। তবে গতকাল পুলিশ আমার কাছে পুরো ঘটনা শুনে এবং আমার স্বাক্ষর নেয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। একাধিকবার ফোন করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

জানা যায়, মাদক সেবন ও ব্যবসার সাথে জড়িত থাকা ছাড়াও আরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে শামীম মোল্লার বিরুদ্ধে। এর মধ্যে রয়েছে, পোষ্য কোটায় ভর্তি হলেও রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ছত্রছায়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান হলে থাকা, অবৈধভাবে হলে থাকলেও হলের ছাদে জার্মান শেপার্ড পোষা, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাইভেট কারে চলাচল করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের হুমকি, সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর ও বিভিন্ন সময়ে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করার মত অভিযোগ ।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক জাবি ছাত্রলীগ নেতা রাজীব আহমেদ রাসেল ও বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চলের অনুসারী ছিলেন।