১৮ বিশ্ববিদ্যালয়ে নষ্ট ৫৫৫৭ বৈজ্ঞানিক যন্ত্র

  © লোগো

গত ছয় বছরে দেশের ১৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরিতে নষ্ট হয়েছে এক হাজার ১৬৮টি বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি। একই সময়ে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে, কিন্তু মেরামতযোগ্য এমন যন্ত্রের সংখ্যা চার হাজার ৩৮৯টি।

সম্প্রতি বাংলাদেশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষা সুবিধাদি উন্নয়নকল্পে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয় শীর্ষক প্রকল্পের প্রভাব মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তব পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

ওই প্রকল্প মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আওতায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বাস্তবায়ন করে। এই প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ছিল ২০০৯ সালের জুন মাস থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পে মোট ব্যয় ছিল ২০ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা।

গবেষক ও শিক্ষাবিদরা বলছেন, এসব প্রকল্পে যন্ত্রপাতি কেনাকাটা করা হয় অপরিকল্পিতভাবে, মূলত বৈদেশিক অর্থায়নে এসব প্রকল্পে গবেষকদের যা চাহিদা তা ক্রয় করা হয় না। ফলে দেখা যায়, বেশির ভাগ যন্ত্র অব্যবহৃত থেকে নষ্ট হয়, রাষ্ট্রের ক্ষতি হয় কোটি কোটি টাকা। 

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এই প্রকল্পের আওতায় দেশের ১৮টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৪৮ হাজার ৬০টি বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়। প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৮২.৩ শতাংশ অর্থাৎ প্রকল্প সমাপ্ত করতে ব্যয় হয়েছে মোট ১৭ হাজার কোটি টাকা এবং ভৌত অগ্রগতি ১০০ শতাংশ।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আইএমইডি বিভাগের জুনে প্রকাশিত প্রভাব মূল্যায়ন প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নষ্ট ও মেরামতযোগ্য গবেষণা যন্ত্রপাতি রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই প্রতিষ্ঠানে প্রকল্পের আওতায় মোট প্রাপ্ত যন্ত্রপাতির সংখ্যা আট হাজার ১২৭টি। এর মধ্যে সচল রয়েছে ছয় হাজার ৫৩৫টি যন্ত্র আর মেরামতযোগ্য ও নষ্ট হওয়া যন্ত্রের পরিমাণ এক হাজার ৫৯২টি। এর পরেই আছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকল্পের আওতায় মোট প্রাপ্ত যন্ত্রপাতির পরিমাণ সাত হাজার ৫২৬টি; তার মধ্যে সচল রয়েছে ছয় হাজার ৫৭৮টি যন্ত্র আর মেরামতযোগ্য ও নষ্ট হওয়া যন্ত্রের পরিমাণ ৯৪৮টি। এর পরেই আছে কুষ্টিয়ার ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়। এই প্রতিষ্ঠানে প্রকল্পের আওতায় মোট প্রাপ্ত যন্ত্রপাতির সংখ্যা সাত হাজার ৯৬৯। এর মধ্যে সচল আছে সাত হাজার ৩৩৮টি যন্ত্র এবং মেরামতযোগ্য ৪১৩টি ও নষ্ট ২১৮টি যন্ত্র। এই তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু প্রকল্পের আওতায় পাওয়া মোট যন্ত্রপাতির সংখ্যার ওপর প্রতিবেদন করা হয়েছে।

অন্যদিকে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকল্পের আওতায় প্রাপ্ত বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির সংখ্যা মাত্র ৪৫৬টি। তার মধ্যে সচল রয়েছে ৪১৬টি যন্ত্র। যন্ত্রের দিক দিয়ে তার থেকে কিছুটা এগিয়ে আছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এই প্রতিষ্ঠানে প্রকল্পের আওতায় মোট প্রাপ্ত বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির সংখ্যা ৫৫১, তার মধ্যে সচল আছে ৪৭৮টি। বৈজ্ঞানিক যন্ত্রের দিক দিয়ে এই দুই প্রতিষ্ঠানের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে থাকলেও ঢাকার প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এই প্রতিষ্ঠানে যন্ত্রপাতি প্রকল্পের আওতায় মোট প্রাপ্ত বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির সংখ্যা ৬১৮। তার মধ্যে সচল ৫৮০টি।


সর্বশেষ সংবাদ