নাগলিঙ্গম ফুলের সৌন্দর্যে সেজেছে ঢাবির কার্জন হল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অসংখ্য রকমের ফুল গাছ দেখা যায়। এমনও ফুলের গাছ আছে, যেটা অনেক আদি ও এখন দেশ থেকে বিলুপ্তির পথে। গাছটির ফুলের সৌন্দর্য যেমন মুগ্ধ করে, আবার ঔষধি গুণও রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে রয়েছে এমন একটি গাছ, যার নাম নাগলিঙ্গম। কার্জন হলে গাছটির ফুলগুলো প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্যের পাশাপাশি সুগন্ধ ছড়াচ্ছে ।
নাগলিঙ্গম সুউচ্চ চিরসবুজ বৃক্ষ। নাগলিঙ্গম আবিষ্কৃত হয় প্রায় তিন হাজার বছর আগে আমাজনের জঙ্গলে। গাছটির আদি নিবাস মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার বনাঞ্চল। নাগলিঙ্গম নামটি সংস্কৃত হতে নেওয়া।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের সামনের মাঠে অবস্থিত এই নাগলিঙ্গম গাছটি বিশাল আকৃতির। অনেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিদর্শনে এলে, প্রায় শত বছরের পুরোনো এই নাগলিঙ্গম গাছ ও এর ফুলে আকৃষ্ট হন।
প্রতিবছর মার্চ থেকে জুলাই নাগলিঙ্গম ফুল ফোটে। গাছের কাণ্ড থেকে শেকড়ের মতো বের হয়। সেই শেকড়ে ফুল ফোটে। একটি শিকড়ে অনেকগুলো ফুল থাকে। ফুলে ফুলে গাছের কাণ্ড আচ্ছাদিত হয়ে যায়। এই ফুলের রং লাল, গোলাপি আর হলুদ মিশ্রিত। আকারে বড়। পাপড়ি ছয়টি এবং তুলনামূলক ভারি। ফুলের মধ্যভাগে রয়েছে গর্ভাশয়। গর্ভাশয়টি সাপের ফণার মতো দেখতে। এর জন্যই হয়তো ফুলটির নাম ‘নাগলিঙ্গম’। ফুল শুকিয়ে গেলে তাতে গোলাকৃতির বাদামি-খয়েরি বর্ণের ফল হয়।
ঔষধি বৃক্ষ হওয়াতে কিছু দেশে চাষ হলেও পৃথিবীতে এ গাছ এখন বিলুপ্তির পথে। নাগলিঙ্গম গাছের রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ। এর ফুল, পাতা ও বাকলের নির্যাস থেকে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ তৈরি করা হয়। অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহার হয় এর নির্যাস। এই গাছ থেকে তৈরি ওষুধ পেটের পীড়ার জন্য খুব উপকারী। পাতার রসও ত্বকের নানা সমস্যায় কাজ দেয়। এছাড়া ম্যালেরিয়া রোগ নিরাময়ে নাগলিঙ্গমের পাতার রস বিশেষ উপকারী।
নাগলিঙ্গম গাছের দেখা দেশে খুব বেশি মেলে না। দেশে অল্প কিছু জায়গায় দুর্লভ এই গাছ রয়েছে। ময়মনসিংহ শহরে এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনে বেশকিছু নাগলিঙ্গম গাছ রয়েছে। প্রাচীন এ গাছটি অল্প কিছু রয়েছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।