করোনার উর্ধ্বগতি সত্ত্বেও কমেছে ঢাবির মেডিকেল সেন্টারের বাজেট
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে করোনার জন্য রাখা হয়নি বিশেষ কোনো প্রণোদনা। বাজেটে করোনা ভাইরাস মহামারির মোকাবিলায় নেই কোনো বরাদ্দ। তার উপর গত অর্থবছরের তুলনায় কমেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের বরাদ্দ।
বৃহস্পতিবার ( ২৪ জুন) বেলা ৩টায় নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এই অধিবেশনে বাজেটের যাবতীয় তথ্য জানানো হয়। সিনেটের চেয়ারম্যান ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছেন।
জানা যায়, গত অর্থবছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের (মেডিকেল সেন্টার) জন্য বরাদ্দ দিয়েছিল ৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরে চিকিৎসা কেন্দ্রের বরাদ্দ কমিয়ে ৬ কোটি ৬৮ লাখ করা হয়েছে। যা গতবারের তুলনায় ৮৬ লাখ টাকা কম। বাজেটে দেখা যায়, গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ দেখানো হয় ৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।
বাজেটে করোনা পরিস্থিতির জন্য কোনো বরাদ্দ কেন নেই সে বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনার জন্য ইউজিসিতে আমরা আবেদন করলেও কোনো বরাদ্দ দেয়নি। আমরা এর আগে দুটি ল্যাব স্থাপন করেছিলাম সেখানেও ইউজিসি অনুদান দেয়নি। সামনে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য একটি বিশাল খরচের খাত তৈরি হবে। এটিকে আমলে নিতে ইউজিসিকে জানালেও তারা কোনো প্রণোদনা দেয়নি। এর জন্য আমাদের নিজেদের থেকে খরচ করতে হবে। কেননা ক্যাম্পাসে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে পারি না। হলে, বিভাগে সব জায়গায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বাজেট অধিবেশনে প্রথমবারের মতো এ বাজেট উপস্থাপন করেন। সভায় এই বাজেট নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করা হয় এবং সর্বসম্মতিক্রমে সিনেটের বার্ষিক অধিবেশনে বাজেটটি অনুমোদন দেয়া হয়।
চলতি অর্থবছরে মোট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল বাজেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৮৩১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। যেখানে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৮৬৯ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত বার্ষিক বাজেটে প্রতিবছরই আগের বছরের তুলনায় বৃদ্ধি করা হলেও এবার সে ধারাবাহিকতা ভেঙে মূল বাজেট কমেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের বাজেটে ৩৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকার কম বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এবারের বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুদান ৬৯৬ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের প্রায় ৮৩.৭৪ শতাংশ।
বাজেট অনুযায়ী, ৮৩১ কোটি ৭৯ লাখ টাকার প্রস্তাবিত এই বাজেটে শিক্ষক-কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন খাতে ২৬৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা, ভাতা খাতে ২২৪ কোটি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, পণ্য ও সেবা খাতে ১৬৮ কোটি ৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা, পেনশনে ১২২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা এবং গবেষণা মঞ্জুরি খাতে ১১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ শুধু বেতন-ভাতা খাতেই খরচ হবে ৪৮৯ কোটি ১৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। যা মোট বাজেটের ৫৮.৮১ শতাংশ।