অনির্দিষ্টকালের জন্য রাবির প্রশাসনিক ভবনে তালা!
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতার শান্তিপূর্ণ সমাধাণ না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্ট কালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়েছেন বিতর্কিত নিয়োগপ্রাপ্ত ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা। এ বিষয়ে সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত খুলবেন না বলে জানিয়েছেন।
গতকাল শনিবার (২০ জুন) সকালে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান আল-আরিফ এবং ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর লিয়াকত আলীকে অবরুদ্ধ করে প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়।
নিয়োগপ্রাপ্তরা বলছেন, ‘আমাদের চাকরি স্থায়ী করুক, নয়তো বাতিল করুক তাতে আমাদের কোন সমস্যা নেই। সমস্যা হলো আমাদেরকে ঝুলিয়ে রাখাটা। আমাদের চাকরি সংক্রান্ত জটিলতার শান্তিপূর্ণ সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত রাখবো।’
রাবি প্রশাসন বলছে, ‘নিয়োগ সংক্রান্ত যে কোন সিদ্ধান্ত নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আমরাও বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই।’
এর আগে, গত শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় নিয়োগপ্রাপ্তদের বাঁধার মুখে বিশ্ববিদ্যালয় ফাইন্যান্স কমিটির (এফসি) সভা এবং এর সঙ্গে সম্পৃক্ত আগামী ২২ জুন তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভাও স্থগিত করে প্রশাসন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত শনিবার বিকেলে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারদিন ইসলাম ও রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান সুমনের নেতৃত্বে নিয়োগপ্রাপ্তরা দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহার বাসভবনে যান। সেখানে রেজিস্ট্রার এবং উপাচার্যকে উদ্দেশ্য করে আপত্তিকর কথা এবং উচ্চস্বরে মন্তব্য করে।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বলেন, নিয়োগপ্রাপ্তরা গতকাল শনিবার আমার বাসভবনে এসেছিলো। তারা আমাকে উদ্দেশ্য করে উচ্চস্বরে মান হানীকর নানা কথা বলেছে। যা আমার কাছে অশোভনীয় বলে মনে হয়েছে।
উপাচার্যের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নিয়োগপ্রাপ্ত ছাত্রলীগ নেতা আতিকুর রহমান সুমন বলেন, ‘আমরা স্যারের সঙ্গে অশোভনীয় কোন আচরণ করিনি। সেখানে অনেকেই ছিলো তাদের মধ্য থেকে হয়তোবা কেউ এমনটি করতে পারে। তবে আমার জানা মতে এমন ঘটনা ঘটেনি।’
নিয়োগের বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য বলেন, ‘নিয়োগপ্রাপ্তদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এফসি এবং সিন্ডিকেট সভা বাতিল করে শিক্ষা মন্ত্রাণালয় বরাবর চিঠি দিয়েছি। তাদের কথা মূল্যায়ন করছি না, বিষয়টি এমন নয়। আমরাও বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। এজন্য নিয়োগপ্রাপ্তদের এবং পুলিশ প্রশাসনকেও শান্তিপূর্ণ আচরণ করতে বলেছি।’
নিয়োগপ্রাপ্তদের দাবির বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘আমরা তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। শিক্ষা মন্ত্রনালয় থেকে তাদের বিষয়ে যা সিদ্ধান্ত নেবে আমরা তাই মেনে নেবো।’
প্রসঙ্গত, গত ৬ মে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবাহান তার বিদায় বেলায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৩৭ জনকে এডহকে নিয়োগ দিয়ে যান। সেদিনই মন্ত্রণালয় সেই নিয়োগকে অবৈধ বলে আখ্যায়িত করেন। পরে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সেই নিয়োগ স্থগিত রেখেছেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা।