জাপানে ১৮ মাসের মধ্যে মাত্র ৫৬ দিন বন্ধ ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

করোনার মধ্যেও জাপানে চালু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
করোনার মধ্যেও জাপানে চালু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  © সংগৃহীত

গতবছর থেকে করোনায় টালমাটাল পুরো বিশ্ব। দীর্ঘদিন ধরে লকডাউনে ছিলো সবকিছু। বাংলাদেশেও এর ব্যাতিক্রম নয়। গতবছর থেকই বন্ধ আছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু জাপানে করোনার ১৮ মাসের মধ্যে মাত্র ২ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছিল। বাকীসময় স্বাভাবিকভাবেই চলছে শিক্ষা কার্যক্রম।

গত বছরের ১৫ জানুয়ারি জাপানে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। আর এখন করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলা করছে দেশটি। দেশটিতে এ পর্যন্ত অঞ্চলভিত্তিক মোট পাঁচবার জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। জরুরি অবস্থা চলাকালে অনেক কিছু বন্ধ কিংবা আংশিক বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিশেষ করে নাইট ক্লাব, পানশালা ও রেস্তোরাঁ বন্ধ রেখে কিংবা খোলা রাখলে অ্যালকোহল বিক্রি না করার শর্ত দেওয়া হয়। একইসঙ্গে জরুরি অবস্থার আওতাধীন অঞ্চলে সিনেমা হল, পানশালা বা রেস্তোরাঁয় থাকা লাইভ মিউজিকের আসর বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতকিছুর পরও দেশটির কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এর তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু রাখা রয়েছে। যেখানে ভর্তি এবং সমাপণী পর্ব জাঁকজমকপূর্ণ এবং উৎসব মুখর পরিবেশে করা হত সেখানে মহামারিতে শিক্ষার্থীদের স্কুল জীবন শুরু ও শেষ কিছুটা শিথিল করা হয়েছে।

গতবছর গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষে স্কুলগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়। যা এখনও অব্যাহত আছে। জাপানে সবধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক কার্যক্রম চললেও সেখান থেকে করোনা ছড়াচ্ছে কিংবা শিক্ষার্থীরা আক্রান্ত হচ্ছেন- এমন কোনো তথ্য নেই সংশ্লিষ্টদের কাছে। তবে, গত বছরের ১ জুন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানতে প্রথমে কিছুদিন শিফট করে ক্লাস নেওয়া হয়।

গত বছরের ফেব্রুয়ারি জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে থাকা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসে ১৭৫ জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় ২ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত প্রাথমিক এবং জুনিয়র স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। যদিও মার্চ মাসে জাপানে স্কুলগুলো এমনিতেই ঢিলেঢালা চলে। কারণ জাপানে শিক্ষা কার্যক্রম এপ্রিল থেকে মার্চে শেষ হয়। গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বসন্তকালীন ছুটি ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। এর মধ্যেও ৭ এপ্রিল নতুন বর্ষে শিশুদের স্বাগতম জানানো হয় অনাড়ম্বর আয়োজনের মাধ্যমে। পরে করোনার সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করলে ৬ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।

এই সাফল্যের পেছনে দেশটির মানুষের সচেতনতা এবং সহযোগিতা সবচেয়ে বড় সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সরকারের দেওয়া দিকনির্দেশনা মেনে চলেছে দেশটির জনগণ। তবে উন্নত দেশ হয়েও টিকা কার্যক্রমে অনেকটাই পিছিয়ে আছে জাপান। যদিও দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য বিনামূল্যে দুই ডোজ করে টিকা নিশ্চিত করে রেখেছে দেশটির সরকার। জাপানে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি টিকা দেয়া শুরু হয় এবং ১৭ জুন পর্যন্ত দুই কোটি ৭০ লাখ টিকা দেওয়া হয়েছে। সেখানে চলতি মাসে মোট ৪ কোটি টিকা প্রদান এবং আগামী নভেম্বরের মধ্যে সবাইকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার কার্যক্রম রোডম্যাপ অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ বয়স্কদের মাধ্যমে টিকা কর্মসূচি শুরু করেছিল।


সর্বশেষ সংবাদ