শিল্পকলা পদকে মনোনীত রাবি অধ্যাপক মলয় ভৌমিক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নাট্যকার অধ্যাপক মলয় ভৌমিক শিল্পকলা পদকে মনোনীত হয়েছেন। ২০২০ সালে জাতীয় পর্যায়ের নাট্যকলায় বিশেষ অবদানের জন্য এ পদকে পাচ্ছেন তিনি। শিল্পকলা একাডেমির প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০১৯ এবং ২০২০ সালের পদক একসঙ্গে দেওয়ার কথা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ্য করা হয়।
অধ্যাপক মলয় ভৌমিক জানান, পদকের জন্য কাজ করি না। নাটককে ভালোবেসে কাজ করি। গুনী বিচারকরা আমাকে কাজের জন্য মনোনীত করেছেন এটা অন্যরকম এক ভালো লাগা। এমন এক পরিস্থিতিতে পদকটা পেলাম, যখন করোনা মহামারির জন্য দেড় বছর ধরে থিয়েটার করতে পারছি না। এতে খুবই খারাপ লাগা কাজ করে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নাট্যকার।
অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের অধ্যাপক। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট নাট্যকার, নির্দেশক ও শিক্ষাবিদ হিসেবে পরিচিত। ২০১৭ সালে নাটকে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। বাংলাদেশে পথনাটক আন্দোলন, বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে মুক্ত নাটক আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তার ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।
বিশ্বিদ্যালয়ের এই নাট্যকার এখন পর্যন্ত ৩৫টির বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত রাজশাহী বেতারে নিয়মিত নাট্যশিল্পী ছিলেন তিনি। এছাড়া বিটিভি ও বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশনে নাট্যকার ও নাট্য শিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। তার রচিত টিভি নাটকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- আট প্রহরের গল্প, ক্ষরণ, ফেরা ইত্যাদি।
ড. ভৌমিক কর্তৃক রচিত মৌলিক নাটকের সংখ্যা ২৬। এছাড়াও ৩৬ টি নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত অনুশীলন নাট্যদল-এর প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম এবং বর্তমানে এর দলপ্রধান এই নাট্যকার। তাছাড়া তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে ৭ নং সেক্টরের অধীনে মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন এই অধ্যাপক।
প্রসঙ্গত, প্রতি বছর জাতীয় পর্যায়ে বিশেষ অবদানের জন্য গুণীজনের জীবন ও কর্মকে মূল্যায়ন করে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় শিল্পকলা পদক প্রদান করে আসছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। প্রত্যেককে সম্মাননা স্বরূপ স্বর্ণপদক ও এক লাখ টাকা প্রদান করা হয়। এবছর দেশের মোট আঠারো গুণীজন ও দুই সংগঠনকে এই সম্মাননা দেয়া হচ্ছে।