ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান ঢাবি শিক্ষার্থীদের
আগামী ১২ জুন পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার (২৬ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে শিক্ষামন্ত্রীর প্রেস ব্রিফিংয়ের প্রতিক্রিয়া, সেশনজট এবং চলমান আন্দোলন পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা দেয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অবস্থা নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে আজ (২৬ মে) শিক্ষামন্ত্রী চলমান ছুটি ১২ জুন পর্যন্ত বর্ধিত করেছেন। আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এই সিদ্ধান্তকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করলাম।
এর আগে, এদিন দুপুরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি ও শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে ভার্চ্যুয়ালি এক সংবাদ সম্মেলন থেকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ১২ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানান।
শিক্ষামন্ত্রীর প্রেস ব্রিফিংয়ের প্রতিক্রিয়ায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি বর্ধিত করার পেছনে তিনি করোনা পরিস্থিতি ও ভ্যাক্সিনের অপর্যাপ্ততাকে দায়ী করেছেন। অথচ করোনা পরিস্থিতিতে কল-কারখানা, অফিস, শিল্পপ্রতিষ্ঠান; এমনকি গণপরিবহণ কোনো কিছুই থেমে থাকে নি। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ আছে কেবল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।’’
অপরদিকে, ভ্যাক্সিন নিয়ে যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য দায়ী সরকারি নীতি-নির্ধারক ও তাদের কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান।
‘‘শিক্ষামন্ত্রী এই অনলাইন প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় নিজেই কয়েকবার ডিসকানেক্টেড হয়ে গিয়েছেন। এছাড়াও, গতকাল বিবিসি বাংলায় সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় ঢাবি ভিসি নিজেও টানা তিনবার ডিসকানেক্টেড হন। সর্বোচ্চ সুবিধাজনক অবস্থায় থেকে তাদের ইন্টারনেটের যদি এমন বেহাল দশা হয়, সেক্ষেত্রে কোন বিবেচনায় তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনলাইন ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন? আমরা শিক্ষামন্ত্রণালয় ও ইউজিসি'র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের কাছে এই প্রশ্ন রাখছি।’’
ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে এতে আরও বলা হয়, আগামীকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর স্মারক লিপি পেশ করবে। একই সাথে সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্ব স্ব উপাচার্য বরাবর এবং অন্যান্য শিক্ষার্থীদের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারক লিপি পেশ করার আহবান জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) রাজু ভাষ্কর্যে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে হল-ক্যাম্পাস খুলে দেওয়াসহ চার দফা দাবি জানান।