এবার পাল্টা লিগ্যাল নোটিশ পাঠালেন সাবেক রাবি উপ-উপাচার্য

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক  © ফাইল ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অতিথি ভবন ও জমি কেনায় অনিয়মের অভিযোগে আলাদা দুটি তদন্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ২০১৭ সালে করা তদন্তগুলোর কোনোটিতেই অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়নি। এ সত্ত্বেও সম্প্রতি রাবির সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহানকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী গোলাম রব্বানী।

এবার ঢাকা আদালতের আইনজীবী গোলাম রব্বানীর বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠালেন অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান। মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করে নোটিশ পাঠানোয় ওই আইনজীবীকে সতর্ক করে নোটিশ দেয়া হয়েছে বলে জানান চৌধুরী সারওয়ার জাহান। আজ সোমবার তাঁর পক্ষে এই নোটিশ পাঠান রাজশাহী আদালতের আইনজীবী নুর-এ-কামরুজ্জামান।

নোটিশে বলা হয়, বিষয়সংশ্লিষ্ট না হয়েও ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল এবং একটি অসৎ মহলের ইশারায় অধ্যাপক সারওয়ার জাহানকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে মিথ্যা ও বেআইনি তথ্য দিয়ে আইনজীবী গোলাম রব্বানী নোটিশ পাঠিয়েছেন। এর আগে করা এক পিটিশনে আদালতের আদেশে বিষয়টি দুদকের তদন্তাধীন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের করা তত্ত্বানুসন্ধান কমিটিও জমি ও ভবন কেনায় আর্থিক অনিয়ম খুঁজে পায়নি।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, আদালতে বিচারাধীন বিষয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য ছড়ানো প্রচলিত আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সদ্য সাবেক উপাচার্য এম আব্দুস সোবহানের দুর্নীতি, অনিয়ম ও বিদায়কালে ১৩৭ জনের গণনিয়োগ দিয়ে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের তদন্তের মুখোমুখি হওয়ার বিষয়টি আড়াল করতেই এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: ইসরাইলের গণহত্যার প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন কাল

গত ৭ মে রাবি উপাচার্য বরাবর পাঠানো নোটিশে বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি ভবন ও জমি ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় অধ্যাপক সারওয়ার জাহানসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ও ‘আত্মসাৎকৃত’ সাড়ে সাত কোটি টাকা ফেরত নিতে বলা হয়। তবে নথিপত্র ও তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বাড়ি কেনায় অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ নেই। নোটিশটি এমন সময় পাঠানো হয় যখন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যশূণ্য এবং খুব শীঘ্রই নতুন উপাচার্য নিয়োগ হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা পর্যায়ে বলাবলি হচ্ছে, অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহানের উপাচার্য হওয়া ঠেকাতে অপপ্রচার ছড়ানোর জন্য মিথ্যা তথ্যে এই নোটিশ পাঠানো হয়ে থাকতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, তৎকালীন উপাচার্য মুহম্মদ মিজানউদ্দীন প্রশাসনের মেয়াদ শেষের দিকে অতিথি ভবনের জন্য ঢাকায় জমি ও বাড়ি কেনার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। আসাদুজ্জামান নামের এক ব্যক্তির রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে দুদক একটি তদন্ত করে যা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। সে বছরই এম আব্দুস সোবহান উপাচার্য হয়ে তত্ত্ব অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেন। কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক গোলাম কবীর জানান, বাড়ি কেনায় আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন: অসংগতির অভিযোগ তুলে পুনরায় মেডিকেলে ভর্তির ফল প্রকাশের দাবি

অধ্যাপক গোলাম কবির বলেন, অতিথি ভবনের জমিটিতে অংশীদারিত্ব নিয়ে সমস্যা ছিল। প্রচলিত বিধি মেনে ক্রয় করা হয়নি। ফলত জটিলতার সৃষ্টি হয়। তবে আর্থিক অনিয়ম বা অর্থ আত্মসাতের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আমরা সেভাবেই রিপোর্ট জমা দিয়েছি।

নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, ২০১৫ সালে তৎকালীন উপ-উপাচার্য সারওয়ার জাহানের নেতৃত্বে অতিথি ভবন ক্রয়ের কমিটি করা হয়। পত্রিকায় উন্মুক্ত দরপত্র প্রকাশের মাধ্যমে নির্বাচিত সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ কিছু শর্ত পূরণ করতে পারেনি। ফলে কমিটি দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করা হয়। কয়েক ধাপে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ করে ক্রয় কমিটি।


সর্বশেষ সংবাদ