অবৈধ কাজের বৈধতা দিতে সভা ডেকেছেন রাবি উপাচার্য
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান নিয়োগ বাণিজ্যের জন্য এডহক ভিত্তিতে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকরা।
আজ রবিবার (০২ মে) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমপ্লেক্সের সামনে আমতলায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তারা। এ সময় তারা বর্তমান উপাচার্যের মেয়াদ আগামী ৬ তারিখ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরনের কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম টিপু বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যকাল আগামী ৬ মে শেষ হতে যাচ্ছে।
মেয়াদের শেষে এসে বর্তমান প্রশাসন বরাবরের মতোই চরম অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে। চাকরি প্রত্যাশী এবং স্বার্থান্বেষী মহলের চাপের মুখে ও দুর্নীতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃত্বহীন হয়ে পড়েছে।
এছাড়াও বর্তমান প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ ও স্বার্থ রক্ষার ব্যাপারে তারা রহস্যজনক ভূমিকা পালন করছেন এবং অদৃশ্য স্বার্থগত কারণে প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সব ধরনের নিয়োগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বর্তমান প্রশাসন নিয়োগ-বাণিজ্যের জন্য এডহকভিত্তিতে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ প্রদানে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। মেয়াদের শেষ পর্যায়ে করোনাকালীন সম্পূর্ণ বন্ধ ক্যাম্পাসে উপাচার্য কর্তৃক তড়িঘড়ি করে এসব আইন-বহির্ভূত টেন্ডার আহ্বান, মেরামতি ও রংকরণ কাজ, এডহক নিয়োগ ইত্যাদি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার ও জনমনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক করছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ও গৌরবের বিরুদ্ধে এটি এক গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে আমরা বিশ্বাস করি।
এদিকে মেয়াদের শেষ সময়ের সকল অবৈধ কাজ ও দুর্নীতিকে উপাচার্য অত্যন্ত চাতুরতার সাথে দাপ্তরিকভাবে বৈধ করতে আজ রবিবার ফাইন্যান্স কমিটি এবং ৪ মে সিন্ডিকেট সভা ডেকেছেন। জনশ্রুতি রয়েছে যে, উপাচার্য এ সভার মাধ্যমে অনেক সংখ্যক এডহক নিয়োগ দিতে চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে সম্মেলনে অভিযোগ করেন অধ্যাপক সুলতান-উল ইসলাম।
সংবাদ সংবাদ সম্মেলনে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্যরা ছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, এদিন সকাল ১০টায় চাকরী প্রত্যাশীদের তোপের মুখে ফাইন্যান্স কমিটির সভা বন্ধ করতে বাধ্য হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সভা শুরুর আগে সকাল ৮টায় এই চাকরী প্রত্যাশীরা উপাচার্যের বাসভবন অবরুদ্ধ করলে সভায় উপস্থিত হতে পারেন নি প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তাগণ।