বিভাগের সামনে প্রস্রাব করায় নেতাকে মারলেন ঢাবির ছাত্রলীগ কর্মী
নিজ বিভাগের সামনে প্রস্রাব করায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় স্কুল ও ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক পুতুল চন্দ্র রায়কে এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী জামান সামি মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মারধরের ঘটনাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের (কাজী মোতাহের হোসেন) ভবনের পাশে ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী।
এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি অভিযোগ পত্র দায়ের করা হয়েছে।
পুতুল চন্দ্র রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (২০১০-১১) সেশন ও জগন্নাথ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। আর জামান সামি আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষ, স্যার এ এফ রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের রাজনীতি করেন বলে জানা যায়।
জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেল থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করে এখন বাসায় রয়েছেন পুতুল। তবে শারিরীক অবস্থা এখনো পুরোপুরি ভালো হয়নি। পুতুল চন্দ্রের সাথে তার আরেক বন্ধু ও ছিলেন। আর হামলাকারীরা মোট চারজন ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আমি ঢাকা মেডিকেলের দিকে ছিলাম। তখন দেখি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের সামনে একদল লোক জড়ে হয়েছে। সেখান থেকে পুতুল চন্দ্র রায় ও তার বন্ধুর উপর হামলার বিষয়টি জানতে পারি।
এ বিষয়ে জানার জন্য পুতুল চন্দ্র রায়ের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, গতরাত সাড়ে ১২টার সময়ে আমি আর আরেক বন্ধু হাটছিলাম। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের সামনে জামান সামি ও আরেকজন মিলে আমাকে ও আমার বন্ধুকে মারধোর করেন। তাদের সাথে আরো দুজন ছিলেন। পরবর্তীতে লোক জড়ো হওয়ার পর তারা সেখান থেকে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। উপস্থিতজনতার কয়েকজন আর আমার বন্ধু আমাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যায়।
অভিযুক্ত জামান সামিকে ফোন দেওয়া হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
হামলার পরবর্তী সময়ে তাকে হাসপাতালে দেখতে যান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ চৌধুরী, উপ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মেশকাত হোসেন, এস এম হলের সাবেক ভিপি এম এম কামাল উদ্দিন এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক ইয়াসির আরফাত তূর্য।
এ বিষয়ে মেশকাত হোসেন বলেন, হামলার বিষয় যখন আমরা শুনি তখন আমরা তাকে হাসপাতালে দেখতে যাই। তাকে ব্যান্ডেজ দেয় হয়। পরিপূর্ণভাবে সেরে উঠতে আরো বিশ্রামের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা বলেন, এটি কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। এ ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চলছে।
অভিযোগ পত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ডিউটি অফিসার (উপ-পরিদর্শক) আবুল মোমেন, আমরা একটি অভিযোগ পত্র পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য কে একাধিকবার মুঠোফোন যোগাযোগ করা হলে তারা ফোন রিসিভ করেন নি। এবং খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তার উত্তর দেননি কেন্দ্রীয় এই দুই নেতা।
পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস কে বলেন, শৃঙ্খলা বিরোধী কাজে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
‘অভিযুক্ত জামান সামি তো আপনার অনুসারী বলে জানা যায়! এ ব্যাপারে আপনি কী বলেন?’ এ প্রশ্নের উত্তরে সাদ্দাম বলেন, সে যেই হোক না কেন! অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।