৩০ হাজার বৃক্ষে ‘চিরসবুজ’ ৭৫৩ একরের রাবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও গেট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও গেট  © টিডিসি ফটো

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই রকমারি ফুল-ফলসহ বাহারি বৃক্ষ-রাজিতে ভরপুর হওয়ায় ‘চিরসবুজ প্রাঙ্গণ’ হিসেবে পরিচিত দেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। তাই সৌন্দর্যে ভরা রকমারি এই বৃক্ষের সমরাহ নিমেশেই নজর কাঁড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ হাজারো দর্শনার্থীর।

তবে কখনও কি মনে প্রশ্ন জেগেছে চির সবুজ এই প্রাঙ্গণে সৌন্দর্য বর্ধনের অন্যতম উপাদান সেই বৃক্ষ-রাজির মোট সংখ্যা কত? উত্তর হলো- ৩০ হাজার ১৯১টি। শুনে অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই। এত নির্দিষ্ট করে কিভাবে বলা হলো। তবে কি ৭৫৩ একর জুড়ে একটি একটি করে গণনা করা হয়েছে? উত্তর- হ্যাঁ, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকল্পের বৃক্ষ শুমারি রিপোর্ট।

প্রথমবারের মতো বৃক্ষ শুমারির উদ্যোগ নেন কৃষি প্রকল্প উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা। গত বছরের ৩ মে থেকে ১৪ মে পর্যন্ত বৃক্ষ শুমারি পরিচালনা করা হয়। শুমারি করতে ক্যাম্পাসের ৯টি স্থানকে ৩৮টি উপ-অঞ্চলে পৃথক করা হয়।

শুমারির পর জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ হাজার ৩২৫টি মেহেগুনি, ৩ হাজার ৪১৫টি আম, ১ হাজার ২৩টি নারিকেল, ৯৩৪টি জাম, ৭৮৬টি কাঠাল, ১৬৫টি লিচু গাছ রয়েছে।

এছাড়াও ১৩ হাজার ৫৪৩ টি বিভিন্ন ধরণের গাছ রয়েছে। যার মধ্যে আছে জারুল, রাধা চূড়া, কৃষ্ণ চূড়া, গগণ শিরিষ, বাদাম, শিমুল, আকাশমণি, বহেরা, আমলকি, হরিতকি, বন কাঠালি, কাঠ বাদাম, তমাল, হিজল, কামরাঙা, বেল, করমচা, হরিফল, লটকন, বিলাতি আমড়া, কাগজি লেবু, মালটা, কদবেল, জলপাই, পলাশ, জামরুল, সফেদা, রক্তকাঞ্চন, ডুমুর, চালতা, ছাতিম, খয়ের গাছ, বইচি ফল, কামিনী, নাশপতি, আমড়া, শিশু গাছ, দেবদারু, আকন্দ, অশ্বত্থ বা পাকুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা বলেন, ক্যাম্পাসের প্রথম বৃক্ষশুমারি হয়েছে করোনার মধ্যে। কিছু গাছের সংখ্যা খুবই কম হওয়ায় সেগুলোর সংখ্যা অন্যান্যের মধ্যে স্থান পেয়েছে। এছাড়া গুল্ম ও বিরূৎ ছাড়া বাকি গাছগুলো গণনায় স্থান পেয়েছে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ বছর মেয়াদী মাস্টার প্লানে ৪টি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে গাছ রোপণের পরিকল্পনা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- কাঠের মূল্যমান, ফলজ, ঔষধি গাছ, ফুল জাতীয় সৌন্দর্যবর্ধক গাছ। এরই মধ্যে সেগুলো বাস্তবায়ন শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা আম্রকানন, মতিহার উদ্যান, শতবর্ষে শত প্রাণ, সফেদা বাগান, মমতাময়ী শেখ হাসিনা আম্রকানন নামে কয়েকটি উদ্যান প্রস্তুত করা হয়েছে।

বৃক্ষশুমারির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাবরিনা নাজ বলেন, গাছ লাগানোর সময় অনেক গাছ লাগানো হয়। তবে সেসব গাছ বেঁচে থাকছে কিনা, বেড়ে উঠছে কিনা সেগুলোর যত্ম নেওয়া এবং দেখভালের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। গাছগুলোর পরবর্তীতে কি অবস্থা সে বিষয়টি বৃক্ষ শুমারির মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা যায়।


সর্বশেষ সংবাদ